"তুমি এসো" — কবি বিবেকানন্দ জানার এক সংবেদনময় কাব্যভ্রমণ, যেখানে হৃদয়ের গভীরতম আবেগ, আত্মার প্রতিবাদ আর প্রকৃতির মর্মভেদী সৌন্দর্য মিলেমিশে তৈরি করেছে এক স্বতন্ত্র কবিতার জগৎ।

এই কাব্যগ্রন্থে কবি কখনো প্রেমের আকুলতা ব্যক্ত করেছেন, কখনো প্রতিবাদের অনল জ্বালিয়েছেন, আবার কখনো গল্প বলেছেন গ্রামের সরল জীবন কিংবা শহরের নিঃসীম হাহাকারের। প্রতিটি কবিতাই যেন একটি নিজস্ব জগৎ, যা পাঠককে টেনে নিয়ে যায় অনুভবের অন্য এক মাত্রায়। প্রথাগত ছন্দের বাঁধনকে সম্মান জানিয়ে এই সংকলনে রয়েছে চতুর্দশপদী কবিতা, যা বাংলা সাহিত্যে একসময় ঐতিহ্য হিসেবে বিরাজমান ছিল। কবি এই রূপকলা ও ছন্দের আঙ্গিককে আধুনিক ভাবনার আলোয় নতুনভাবে প্রাণ দিয়েছেন।

"হিংসার কাছে হেরে গেলে মনের পরিমাপ নিয়ো,
সন্ধ্যা নেমেছে যেখানে প্রদীপ জ্বালিয়ে দিয়ো।"

— এই পঙ্‌ক্তির মতোই, কবিতাগুলো পাঠককে আহ্বান জানায়—সময়ের আঁধারে আলো জ্বালাতে, ভাঙা হৃদয়ে আশার প্রদীপ ধরাতে।

এই কাব্যগ্রন্থে শুধু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নয়, সমাজের প্রতি এক গভীর দায়বদ্ধতাও ধরা পড়ে। কবির কলম যখন প্রতিবাদে সরব হয়, তখন তা হয় নিঃশব্দে বিস্ফোরণ। যখন প্রেমের কথা বলে, তখন তা হয় আত্মার নিঃশ্বাসে লুকোনো উচ্চারণ।

‘তুমি এসো’ কেবল একটি কাব্যগ্রন্থ নয়, এটি একটি আমন্ত্রণ—প্রকৃতিকে, মানুষকে, সম্পর্ককে, সমাজকে নতুনভাবে উপলব্ধি করার। কবি চান, তাঁর লেখা পৌঁছে যাক সাধারণ মানুষের হৃদয়ে, কারণ সেখানেই রয়েছে কবিতার প্রকৃত পাঠক, সেখানেই আছে ভাষাহীন আবেগের বিশুদ্ধ প্রকাশভূমি।

যাঁরা খুঁজে পান কবিতায় আর্তির আশ্রয়, প্রেমের পরিধি কিংবা প্রতিবাদের উচ্চারণ, তাঁদের জন্য “তুমি এসো” হয়ে উঠতে পারে একান্ত ঘরোয়া, আন্তরিক এক আশ্রয়স্থল।