কুষ্টিয়া: যেখানে সাইর বারামখানা- যাত্রা পর্ব
'লালন তোমার আরশিনগর, আর কতদূর আর কতদূর' রাস্তা যেন আর শেষই হয় না। শেষমেশ না পেরে মনে মনে সাঁইজিকে ডাকা শুরু করলাম। কুষ্টিয়ার মেডিকেল পড়ুয়া কয়েকজন বন্ধু আছে। তাদের মুখে নিত্য শুনতে শুনতে ধারণা হয়েছিল কুষ্টিয়া হয়তো আশেপাশে কোথাও হবে। কিন্তু খুলনা থেকে ঘণ্টা চারেক যাওয়ার পরেও যখন সাঁইজির আখড়া আরশিনগর হয়েই রইল, বৈরাগী সুর তো তখন মনের গাঙে বাঁধ ভাঙবেই। এ তো গেল পথের ঝক্কি। যাওয়ার বন্দোবস্ত করতেও কম বেগ পোহাতে হয়নি। কিন্তু যাওয়া যখন ধার্য, মিছে চিন্তায় কি হবে কার্য?
দোল পূর্ণিমার রাতে লালন সাঁই তাঁর শিষ্যদের নিয়ে মত্ত হতেন তত্ত্বকথায় আর প্রাণ মেলাতেন গানে। স্বর্গীয় চাঁদের আলোয় ভেসে যেত মর্তের চাঁদপানা মুখগুলো। খঞ্জনিতে উঠত ঝংকার। রাত গড়াত। সাধের একতারায় সুর উঠত, চাঁদের গায়ে চাঁদ লেগেছে আমরা ভেবে করব কী?

লালন সংগীতের একজন আনাড়ি শ্রোতা হিসেবে আর টুকটাক ঘোরাঘুরির ভূত মাথায় থাকাতে এ সুযোগ মিস করতে চাইলাম না। ওদিকে পরীক্ষার সিজন চলছে। আমার অতি মেধাবী বন্ধু এবং অতি মেধাবিনী বন্ধুনীদের লালন মেলাতে যাওয়ার কথা পাড়তেই তারা এমনভাবে আমার দিকে তাকাল, যেন আমি ভিনগ্রহী জন্তু। অধিক আর কথা না বাড়িয়ে জান-পরান নিয়ে ফিরে এলাম।

                                                                                                                                                                    Quoted from Abhijan Publishers Facebook Page