বইটির মধ্যে থাকছে সর্বমোট ৫টি লেখা। ইতিহাসের 5খানি ধুসর সভ্যতার উপরে এই কাহিনীগুলো রচিত হয়েছে। ধুসর সময় বলতে, সভ্যতাগুলো ছিল এগুলোর প্রত্নতাত্বিক প্রমাণ রয়েছে, কিন্তু সভ্যতাগুলি সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায় না। এবার আসুন দেখে নিই কাহিনীগুলো কি কি বিষয়ের উপরে রচিত হয়েছে:

> অভিসার- এটি প্রথম কাহিনী। গুজরাট উপকূলে রয়েছে পাঁচ হাজার বছরের প্রাচীন লোথাল সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ। উন্নত এই সভ্যতার শেষের কয়েকটি দিন নিয়ে এই কাহিনীটি লিখিত হয়েছে, কেমন ছিল মানুষজন, তাদের জীবনযাত্রা, ধর্মাচরণ, শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয়ে রয়েছে বর্ণনা। একদিন এমন এক ঘটনা ঘটল, সারাটা সভ্যতা কেঁপে উঠল, নাড়িয়ে দিল মানুষের বিশ্বাসের ভিত। তারপর?

> কালের কপোলতলে- এটি দ্বিতীয় কাহিনী। সিনৌলির নারী যোদ্ধাদের কাহিনী। বর্তমান দিল্লীর থেকে কিছুটা দূরে রয়েছে চার হাজার বছরের পুরনো নারী যোদ্ধাদের কবর। সবচেয়ে অবাক বিষয় এই নারী যোদ্ধাদের পা কাটা রয়েছে গোড়ালির থেকে। দক্ষ এবং অদিতি সেই সময়ের দুই যোদ্ধা। একদিন তাদের অপহরণ করা হল। অপহরণের পেছনে কি উদ্দেশ্য ছিল? এক গভীর ষড়যন্ত্র।

> বিষ্ণু ভক্ত- এটি তৃতীয় কাহিনী। মধ্যপ্রদেশের বিদিশার নিকটে পাওয়া গিয়েছে এক স্তম্ভ। সেটি এক বিষ্ণুভক্তের নিবেদিত। তবে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে সেই ভক্ত ছিলেন না ভারতের মানুষ। জন্মসুত্রে তিনি ছিলেন গ্রীক। কেমন ছিল তার জীবন? কেমন ছিল সেই সময়ের ভারত?

> গঙ্গাহৃদির জ্যোতিষী- চতুর্থ এই কাহিনীতে পাবেন আমাদের এই বঙ্গের (অবিভক্ত) গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ অঞ্চলের সমৃদ্ধ রাজ্য গঙ্গাহৃদির কথা। গ্রীক ঐতিহাসিকদের উচ্চারনে গঙ্গারিদি। যেমন সমৃদ্ধ ছিল এই রাজ্য, তেমনি ছিল বিশাল। শিল্প শিক্ষা সংস্কৃতি উন্নতির শীর্ষে বিচরণকারী এই সভ্যতার উন্নত জীবনযাত্রার বর্ণনা রয়েছে এই কাহিনীতে। তাম্রলিপ্ত ছিল এই অঞ্চলের অন্যতম সেরা বন্দর, এবং দেবী বর্গভীমা ছিলেন এই রাজ্যের অধিষ্ঠিতা দেবী। গঙ্গাহৃদির সাথে সুন্দর যোগাযোগ ছিল কামরূপের (বর্তমান আসাম), যোগাযোগ ছিল উজ্জ্বয়িনির সাথে, কাশীর সাথে। এইসব অঞ্চলের রাজারা আলাদা হলেও তারা একযোগে চালিয়ে যেতেন রাস্তাঘাট এবং জনসাধারণের উন্নতি সুখ সুবিধার কল্যাণকাজ। এই উন্নত সভ্যতার বুকে একদিন সিংহল থেকে আগমন হল দুইজন জ্ঞানী ব্যাক্তির, তারা এসে আশ্রয় খুঁজলেন গঙ্গাহৃদির বুকে। তারপর রচিত হল আরেক ইতিহাস, বঙ্গের বুকে তারা আজও রয়ে গেলেন চিরস্মরণীয় ব্যাক্তিত্ব হয়ে তাদের চোখে দেখুন সেই সময়ের বঙ্গ, সিংহল, উজ্জ্বয়িনি, কামরূপ, উয়ারি-বটেশ্বর ইত্যাদি প্রাচীন সভ্যতার জীবনযাত্রা।

> মহাকালের ডাক- এটি পঞ্চম কাহিনী। এই কাহিনীটির প্রেক্ষাপট রচিত হয়েছে পান্ডিয়া রাজাদের নিয়ে। এনারা কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন কিন্তু এরপর তাদের রাজত্ব হারিয়ে যায়। কিন্তু রয়ে গেলেন সেই বিশাল রাজ্যের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। এই দেবী আজও ভারতের বুকে পূজিত হন। তিনি কন্যাকুমারী দেবী। সেই বিখ্যাত পান্ডিয়া রাজাদের রাজ্য কোথায় অবস্থিত ছিল? কিভাবেই বা হারিয়ে গেল তাদের উন্নত সভ্যতা, সমৃদ্ধ রাজ্য? মহাভারতের যুদ্ধের শেষে যে সমস্ত অস্ত্র ছিল অব্যবহৃত, সেগুলির কি হল? সব মিলিয়ে সেই সময়ের ভারতের বুকে কি প্রভাব এনেছিল এইসব ঘটনাবলী? কাহিনীটি বিভিন্ন বিক্ষিপ্ত সূত্র এক স্থানে করার প্রচেষ্টা মাত্র…