কালীগুণীন: অতিপ্রাকৃতের বিরুদ্ধে এক মহাযুদ্ধ!

    নরমেধের ছায়ায় ‘আপাই’ ফিরে এল! কালীপদ মুখুজ্জের গলা কাঁপছিল, চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ— "বড়ো ভয়ানক বিপদ! এই গাঁয়ে আপাই ঢুকেছে ডাক্তার!" এই কথা শোনার পরেই বুক কেঁপে উঠল আমার। কারণ, ডাকিনীর বিল গ্রামে নেমে এসেছে এক ভয়ঙ্কর বিভীষিকা!

এই রহস্যময় হত্যাকারী সহস্র রূপ ধরে গাঁয়ের একের পর এক মানুষকে নিঃশব্দে গ্রাস করে চলেছে। তার অস্তিত্ব শুধু মৃত্যু আর রক্তের সাক্ষ্য রেখে যায়। হঠাৎই সামনে এল এক প্রাচীন গুপ্ত বিদ্যা, যা বদলে দিতে পারে গোটা পৃথিবীর ভারসাম্য। কিন্তু কালীগুণীন কি পারবে এই রক্তপিপাসু আপাইকে রুখতে? নাকি নরমেধ আবার শুরু হবে?

     ছিন্নমস্তার পুঁথি ও কালীগুণীনের লড়াই

গণপতি কবিরাজ পাহাড়ের গভীরে এক রহস্যময় গ্রাম থেকে সংগ্রহ করেছে এক অলৌকিক পুঁথি। এই প্রাচীন বিদ্যা এতটাই শক্তিশালী যে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভিত্তিই কেঁপে উঠতে পারে! কিন্তু এই পুঁথির কথা জানাজানি হতেই এক নরপিশাচ ঝাঁপিয়ে পড়ল। তার উদ্দেশ্য? এই মহাবিশ্ব পরিবর্তনকারী গোপন বিদ্যাকে নিজের হাতে নেওয়া! এবার কি কালীগুণীন তার অদম্য কৌশল আর তীক্ষ্ণ বুদ্ধি দিয়ে এই ভয়ঙ্কর নররাক্ষসকে হারাতে পারবে? নাকি অন্ধকার গ্রাস করবে মানব সভ্যতাকে?

      বাঘামূড়ার অভিশাপ ও রক্তপিপাসু আতঙ্ক

গ্রামের বৃদ্ধ আঁতকে উঠল, হাতজোড় করে কাঁপতে কাঁপতে বলল, "এ কি সর্বনাশ করলি তোরা? বাঘের হাতে মানুষের মাথা আর শরীর বিচ্ছিন্ন হলে কী ভয়ঙ্কর কিছুর জন্ম হয়, তা জানিস না?" এরপরই শুরু হল এক অকল্পনীয় বিভীষিকা। সাতটি গ্রামের পর গ্রাম এক রক্তপিপাসু নরবাঘের হাতে ধ্বংস হতে লাগল। সে শুধু হত্যা করে না— ছল, কৌশল, ভয় আর প্রতারণায় শিকার ধরে! মানুষ বনাম এই ভয়ঙ্কর বাঘ-মানুষের অসম লড়াইয়ে কীভাবে টিকে থাকবে কালীগুণীন?

      বাঘের থাবায় লুকিয়ে থাকা ভয়ংকর সত্য

দেবেন্দ্র জমিদার হলেও নেশা ছিল অদ্ভুত সব গবেষণার। এক প্রাচীন পুঁথি থেকে সে এক অভূতপূর্ব আরক তৈরি করল, যার প্রভাবে মানুষের শরীরের গঠন সম্পূর্ণ বদলে যায়! কিন্তু… এই আবিষ্কার কেবল একটা ভুল ছিল না। এটা এক নররাক্ষস সৃষ্টির সূত্রপাত্র! হাতকাটা সাধু এই শক্তির কথা জানতে পেরে পূর্ণশক্তি প্রয়োগ করে ঝাঁপিয়ে পড়ল। কারণ, এই আরকের হাতিয়ার যার হাতে থাকবে, তার হাতে থাকবে বিধ্বংসী ক্ষমতা। কালীগুণীন কি এবারেও নিজের মেধার জোরে এই দানবীয় ষড়যন্ত্রকে থামাতে পারবে? নাকি এই অভিশপ্ত বিদ্যা গোটা পৃথিবীকে তছনছ করে দেবে?

     রাহুর গ্রাস— এক অভিশপ্ত অতীতের উত্থান

সুন্দরবনের গভীরে, এক অখ্যাত গ্রামে চলছিল খননকার্য। কিন্তু মাটির নিচে যে এক আস্ত প্রাসাদ লুকিয়ে আছে, তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।কিন্তু, এই প্রাসাদ আদৌ কি ছিল রাজাদের বিলাসবহুল অট্টালিকা? নাকি এক ভয়ঙ্কর কারাগার, যেখানে বন্দী ছিল এক অশুভ শক্তি? খনন হতেই নেমে এলো মহা সর্বনাশ! একের পর এক গ্রামবাসী অদ্ভুতভাবে মৃত্যু বরণ করতে লাগল। নরমেধের পালা আবার শুরু হল। এবার কালীগুণীন কি পারবে এই উগ্র দানবের অভিশাপ থামাতে? নাকি সভ্যতার অন্ধকার অতীত আবার ফিরে আসবে?

      ভয় ও অলৌকিকতার এক অমোঘ জাল— কালীগুণীন কি পারবে বারবার এই অতিপ্রাকৃত শক্তির মোকাবিলা করতে? নাকি এ এক যুদ্ধে যেখানে হার অনিবার্য?