রক্তবীজের অভিশাপ—শল্যচিকিৎসার উত্থান থেকে উপনিবেশিক ষড়যন্ত্র, এক শতাব্দীব্যাপী গোপন রহস্য

কিছু রহস্য সময়ের গহ্বরে হারিয়ে যায়, কিছু রহস্য ইতিহাসের পৃষ্ঠার আড়ালে চাপা পড়ে, আর কিছু রহস্য ঘুমিয়ে থাকে—যতক্ষণ না কেউ তাদের জাগিয়ে তোলে। এই গল্প সেইসব রহস্যের, যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এক অজানা যোগসূত্রে জুড়ে আছে, যার প্রতিটি বিন্দু রক্তের দাগে চিহ্নিত।

৬২০ খ্রিষ্টপূর্ব: জন্ম নিল কি রক্তবীজ?

বারাণসীর পবিত্র ভূমিতে চিকিৎসাবিজ্ঞানের এক মহান সাধক, মহর্ষি সুশ্রুত, তার প্রিয় শিষ্য পরাশরের মৃত্যুর শোকে হতবাক। এক অমোঘ আদেশ প্রতিধ্বনিত হয় তার হৃদয়ে—

"পবিত্র গ্রন্থে জীবনের সন্ধান কর... মৃতের দেহে প্রাণ সঞ্চার কর... রক্তবীজ প্রস্তুত কর সুশ্রুত…।” 

এই ধ্বনি কি এক অলৌকিক আবেগ, নাকি বিজ্ঞানের গোপন এক অধ্যায়ের সূচনা? শল্যচিকিৎসার জনক কি সত্যিই এমন এক আবিষ্কারের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছিলেন, যা প্রকৃতির নিয়মকে চিরতরে বদলে দিতে পারত?

"যে জ্ঞান জীবন দেয়, সে কি মৃত্যু জাগিয়ে তুলতে পারে?"

১৮৭০ খ্রিষ্টাব্দ: আরব সাগরের অতল গহ্বরে এক লুকিয়ে থাকা সত্য

সমুদ্রের গভীরে ডুবে থাকা এক রহস্য, যা মানব সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গোপন সত্যগুলোর একটিকে আড়াল করে রেখেছে। এই রহস্য কি চিরতরে হারিয়ে যাবে, নাকি একদিন জেগে উঠবে তার দীর্ঘ ঘুম ভেঙে? সেই একই সময়ে ইংল্যান্ডের এক অন্ধকারাচ্ছন্ন গবেষণাগারে, বিজ্ঞানী বেনেট সারি সারি মৃতদেহ নিয়ে পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু কেন? এই অভূতপূর্ব গবেষণা কি শুধুই বিজ্ঞানের নতুন দিগন্ত, নাকি এক ভয়ানক পরিণতির দিকে এগিয়ে চলেছে মানব সভ্যতা?

১৯২০ খ্রিষ্টাব্দ: কলকাতায় এক নতুন রহস্যের জন্ম

নতুন শতকের কলকাতা। অস্থির, অশান্ত, দুঃস্বপ্নে জর্জরিত। এই শহরের বুকেই দুই ব্যর্থ যুবক তাদের ভাগ্য বদলানোর আশায় খুলল এক ডিটেকটিভ এজেন্সি। তবে ভাগ্য কি তাদের সহায় হবে? না কি ব্যর্থতা আর হতাশা ছাড়া কিছুই জুটবে না? ঠিক তখনই তাদের দরজায় উপস্থিত হলেন এক অভিজাত মক্কেল—বিখ্যাত সাহিত্যিক যতীনবাবু। তিনি শোনালেন এক রুদ্ধশ্বাস আখ্যান—বর্ধমান রাজবংশের ধ্বংস, ভীমগড় দুর্গের লুট, ঠগীদের হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ষড়যন্ত্র, আর এক ভয়ানক সত্য যা এতদিন ঢাকা পড়ে ছিল সময়ের ধুলোয়।

কিন্তু, এই সব বিচ্ছিন্ন কাহিনির মধ্যে লুকিয়ে থাকা যোগসূত্র কী? শতাব্দী পেরিয়ে আসা এক অভিশাপ, এক গোপন গবেষণা, আর এক বিস্মৃত অতীত—এই তিনের মিলনবিন্দু কোথায়? কলকাতার বুকে জন্ম নেওয়া এই দুই গোয়েন্দা কি পারবে পর্দা সরিয়ে সত্যকে সামনে আনতে? নাকি তারাও হারিয়ে যাবে ইতিহাসের অন্যসব রহস্যের মতোই?

"যতই গোপন রাখা হোক, সত্য একদিন বেরিয়েই আসে—আর যখন আসে, তখন পুরো পৃথিবীকে নাড়িয়ে দেয়।"