Welcome to Dorlink
Selected Books
×
Bhim O Bhimayan

Writer : Moumita Ghosh

Edited By : NA

Compiled By : NA

Translated By : NA

Publishers : Basak Book Store

  • Shipping Time : NA
  • Policy : Return/Cancellation?

    You can return physically damaged products or wrong items delivered within 24 hours with photo/video proof.
    Contact Customer Support for return initiation and receive return authorization via email. Securely package for return.

    Refunds for eligible returns are processed within 7-10 business days via Bank Transfer.
    Order cancellation allowed within 24 hours of placing it. Standard policy not applicable for undamaged/wrong product cases. Detailed info.

  • Genre : Literature>Novels & Novellas
  • Publication Year : 2022
  • ISBN No : NA
  • Binding : Paste Board (Hard)
  • Pages : NA
  • Weight : NA
  • Height x Width x Depth : xx Inch
MRP : ₹299.00/- Discount : 12% Off
Your Price : ₹262.00/-
MRP is subject to change as per edition/impression by the publisher.
If so, it will be notified

About the Book

'ভাই না, ওরা ছিল শত্রুপক্ষ। সম্পর্কে ভাই হলেও দুর্যোধন জানত যে পান্ডবরা ওদের পথের কাঁটা। পান্ডুরাজার জন্যে ধৃতরাষ্ট্র জ্যেষ্ঠ হয়েও সিংহাসন পাননি। শুধু তাই নয়, যুধিষ্ঠির বয়সে বড় হওয়ায় পরবর্তী সিংহাসনও তার হাতেই যাবে। অতএব এই পথের কাঁটাদের উপড়ে না ফেলতে পারলে ওরা কোনোদিনই নিষ্কন্টকভাবে রাজ্য শাসন করতে পারবে না – বুঝতে পেরেছিল দুর্যোধন। আর সেই কারণেই পথের কাঁটা সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে ওরা’।

‘মানে? কি করল ওরা তখন?’

‘আসলে দুর্যোধনের খুব ছোটবেলা থেকেই মাথায় কূটবুদ্ধি গিজগিজ করত। আর তাতে মদত দিতেন ওর মামা শকুনি। ভীম ফিরে আসার পর দুর্যোধন দেখল ওকে তো আর এমনি এমনি মেরে ফেলা যাবে না, অতএব এমন একটা অবস্থার তৈরী করতে হবে যাতে সকলে ভাবে এটা নিছক দুর্ঘটনা। গঙ্গার ধারে প্রমাণকোটি বলে একটা বাড়ি ছিল, যেটা ছিল দুর্যোধনের খেলার জায়গা। দুর্যোধন একদিন পান্ডব ভাইদের প্রমাণকোটিতে নিমন্ত্রণ করল। একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করবে, খেলাধূলা হবে – এমনটাই বলেছিল ও। আর খাওয়াদাওয়ার কথা শুনে ভীম তো মহানন্দে রাজী! এখানেই চালাকিটা করল দুর্যোধন। ভীমের জন্য সযত্নে বিশেষ খাবারের বন্দোবস্ত করল ও। সবাইকে দেখাল যে ভাইকে কত ভালবাসে। আর অলক্ষ্যে সেই খাবারে মিশিয়ে দিল কালকূট সাপের বিষ। সে বিষ এমনই যে একবার তা শরীরে প্রবেশ করলে আর বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা নেই। ভীম নেহাত প্রবল বলশালী ছিল বলে বেশ কিছুক্ষণ লড়াই করতে পেরেছিল ওই বিষের সঙ্গে। ওই বিষ শরীরে নিয়েও ভাইদের সঙ্গে গঙ্গায় নেমে খেলা করেছে, চান করেছে ও। কিন্তু উঠে আর পারল না। শরীরে অসম্ভব জ্বালা করছিল। গঙ্গার ঠান্ডা হাওয়ায় একটু শরীরটা ঠিক হবে ভেবে শুয়ে পড়ল গঙ্গাতীরেই। আর ওর দু’চোখে নেমে এল কালঘুম!

এদিকে আশ্চর্যের ব্যাপার কি জানো, ভীমকে এই অবস্থায় বাকি কেউই খেয়াল করেনি। সবাই খেলাধূলা করে বাড়ি ফিরে গেছে। ভীমকে দলে দেখতে না পেয়ে ভেবেছে সে হয়ত আগেই চলে এসেছে বাড়িতে। মানে ভীমের যে কোনো বিপদ হ’তে পারে, সেটা কারোর চিন্তাতেও আসেনি। কিন্তু বাড়ি ফিরেও যখন দেখা গেল সে আসেনি, তখন ভয় পেল সবাই। দুর্যোধন জানত যে পান্ডব ভাইরা দ্বিতীয় পান্ডবকে খুঁজতে আসতে পারে গঙ্গাতীরে। তাই সে বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে সবাই চলে যাওয়ার পরেই ভীমের বিশাল শরীরটা বিভিন্ন লতাপাতা দিয়ে বেঁধে গড়িয়ে ফেলে দিয়েছিল গঙ্গায়। পান্ডবরা যখন ভীমকে খুঁজতে এল নদীর পাড়ে, সেখানেও দেখা মিলল না তাদের ভাইয়ের। এদিকে ভীম অচৈতন্য অবস্থায় জলের নীচে পড়ে পৌঁছে গেছিল একেবারে পাতালের নাগলোকে। যেখানে রয়েছে ভয়ঙ্কর সব সাপ!’

‘কি সাঙ্ঘাতিক! যতই শত্রু হোক, নিজের কাকার ছেলেকে কেউ এভাবে মেরে ফেলার কথা ভাবতে পারে? তাও আবার ওই পনেরো বছর বয়সে? দুর্যোধন কিসে তৈরী?’ – বড় বড় চোখ করে প্রশ্ন করে ভূপী।

‘এই তো সবে শুরু! পান্ডব আর কৌরবদের শত্রুতা এমন জায়গায় পৌছেছিল, যা পৃথিবীর ইতিহাসে নজির হয়ে আছে। ভাই ছিল ওরা নামেই!’

‘তারপর কি হল? ভীম কিভাবে ওই নাগেদের হাত থেকে বেঁচে ফিরল? আমার তো শুনেই কিরকম গাঁয়ে কাঁটা দিচ্ছে!’

‘আসলে পান্ডব ভাইদের ওপরে ঈশ্বরের অসীম আশীর্বাদ ছিল। তাই তারা বিপদে হয়ত বহুবার পড়েছে, কিন্তু সেই বিপদ জয় করে বেরিয়েও এসেছে। এক্ষেত্রেও তাই হল। ভীম নাগলোকে গিয়ে পৌছানোর পর সাপেরা তো মোটেই খুশি হয়নি। বারংবার দংশন করতে লাগল ওকে। আর কথায় বলে না বিষে বিষে বিষক্ষয়! এটা হল ঠিক সেই ঘটনা। সাপের কামড়ে নষ্ট হল কালকূট বিষ। আর চেতনা ফিরে এল ভীমের। সে তো জেগে গিয়ে যেই দেখল ওকে সাপেরা কামড়াতে আসছে, ও সাপেদের পরপর মেরে ফেলতে লাগল। আগেই বলেছি, ভীমের শরীরে দয়ামায়া বিশেষ ছিল না। ততক্ষনে খবর চলে গেছে নাগেদের রাজার কাছে। নাগেদের রাজা বাসুকীর প্রপৌত্রী ছিলেন কুন্তী। সেই কুন্তীর ছেলে ভীম! অর্থাৎ বাসুকীর নাতির নাতি! ফলে ভীমের পরিচয় জানার পর উৎসব শুরু হয়ে গেল নাগলোকে। পরম যত্নে ওকে আদর করে খাওয়ালেন বাসুকী। আর ভীমও এমন, অত যত্ন, খাবার ওইসব দেখে মা-ভাইদের কথা বেমালুম ভুলে গেল। ওর জন্যে যে কেউ চিন্তা করতে পারে, সেটা আর ওর মাথায় রইল না। এদিকে হস্তিনাপুরে তখন কান্না জুড়েছেন কুন্তী। তাঁর ছেলে যে আর ইহলোকে নেই, সে ব্যাপারে একরকম নিশ্চিত হয়েছিলেন তিনি। আর এসবের পিছনে যে দুর্যোধনের চক্রান্ত কাজ করছে, সেটা বুঝতেও তাঁর সময় লাগল না। শুধু ভীমকে কোথায়, কীভাবে মেরে ফেলল, সেটাই জানতে চেষ্টা করছিলেন উনি, যাতে দুর্যোধনকে শাস্তি দেওয়া যায়।

এইসব করতে করতেই বেশ কয়েকদিন কেটে গেল। আর তারপর একদিন হঠাৎ সবাই দেখল খুব সেজেগুজে, প্রচুর উপহার নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসছে ভীম। তার শরীরে যত্নের ছাপ স্পষ্ট। দুর্যোধনের সমস্ত আশায় জল ঢেলে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরলেন ভীম! অযুত হাতীর বল এল তার শরীরে। কারণ বাসুকী বাহ্যিক উপহার ছাড়াও সবার অলক্ষ্যে তাকে এই বিশেষ উপহার দিয়েছিলেন। বাসুকীর কাছে আটটি কুন্ডের রসায়ন পান করে অমানুষিক শক্তির অধিকারী হয়েছিলেন ভীম।’

‘এমন হাতেনাতে ফল বোধহয় শুধু গল্পের পাতাতেই পাওয়া যায় দাদা। বাস্তবে তো রোজ, প্রতিদিন এরকম অন্যায় কত হয়! কত দুর্যোধন মারে ভীমকে, ভীম মরেও যায়। কোনো বাসুকী আসেনা তাদের বাঁচানোর জন্য’ – একটু নিভে যাওয়া গলায় বলে ভূপী।

‘তুমি ভুল করছ ভূপী। আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি, মহাভারত কিন্তু কোনো গল্পকথা নয়। আজকের দিনে শুধু তার আঙ্গিক আলাদা। জলের নীচে নাগলোকে গিয়ে বিষ তুলে আনার ব্যাপারটা তোমার অস্বাভাবিক লাগছে শুনতে। কিন্তু এরকম তো আজ হতেই পারে যে সে হয়ত এমন একজন ডাক্তারের হাতে পড়ল যে তাঁকে সুস্থ করে তুলল, আর আত্মীয়তা বের হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালে বেশ কিছুদিন যত্নে রেখে তারপর বাড়ি ফেরাল? এমনটা তো হ’তেই পারে তাই না? যুগের সঙ্গে সঙ্গে ঘটনার আঙ্গিক, চরিত্রদের ব্যবহার – এসব বদলে যায়। কিন্তু ঘটনার সারসত্যটা চিরকাল এক থাকে।