দেশভাগের অনেক আগে থেকে দুই গোষ্ঠীর ব্যবধান, আত্মপরিচয়ের দ্বন্দ্ব, ইতিহাস বিভাজন রয়েছে। পাশাপাশি সহাবস্থান করলেও দূরত্ব কমেনি, সংঘাত প্রকাশ্য। শরৎচন্দ্রের মতে, অবাঞ্ছিত ব্যবধান। অন্নদাশংকর বলেছেন, হাড় আর মাংস জুড়লেই যেমন মানুষ হয় না, তেমনি হিন্দুর সঙ্গে মুসলমান জুড়লে বাঙ্গালী হয় না, ভারতীয় হয় না। রবীন্দ্রনাথের মতে, পৃথিবীতে কম্যুনাল বিরোধ নানা চেহারায় রয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশে সেটা কিম্ভুতকিমাকার রূপ নিয়েছে। দুই সম্প্রদায়ের ইতিহাস বিভাজন, আত্মপরিচয়ের বৈপরিত্য, রাজনৈতিক সংঘাত বিষয়ে সাহিত্যিক, ঐতিহাসিক, সমাজতত্ত্ববিদদের রচনায় অবাঞ্ছিত ব্যবধানের উৎস সন্ধান ও মূল্যায়ন করা হয়েছে। যুক্ত বাংলার ব্রিটিশ প্রকল্প, ভারত ভাগের অপরাধী কারা, দুই গোষ্ঠীর অস্মিতার সংকট, ভারতে মুসলমানদের অবদান, অতীতবিলাসী মুসলিম সমাজ, হিন্দুনিন্দা প্রবণতা, সেক্যুলারবাদের ভ্রান্তি, ধর্মনিরপেক্ষতার সমস্যা, হিন্দুত্ববাদ বিষয়ে লিখেছেন: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, স্যার যদুনাথ সরকার, রেজাউল করীম, রামমনোহর লোহিয়া, অন্নদাশংকর রায়, রজনী কোঠারী, টি. এন. মদন, সুধীর কাকর-ক্যাথরিন কাকর, আশিস নন্দী, রামচন্দ্র গুহ, জহর সেন, সব্যসাচী ভট্টাচার্য, স্বামী সোমেশ্বরানন্দ, সজল বসু, মিত্র কৌটিল্য, অমিত দাশ, সলিল কপাট।

অভিজ্ঞ সমাজ গবেষক, ইংরাজী ও বাংলায় অসংখ্য গ্রন্থ প্রণেতা, সর্বভারতীয় স্তরে কয়েকটি সংস্থায় রিসার্চ ফেলো ছিলেন, নিজে বহু গবেষণা প্রকল্প পরিচালনা করেছেন। ড. বসুর সম্প্রতি প্রকাশিত গ্রন্থ: জরুরি অবস্থা: আন্দোলন ও আত্মপরিচয়ের রাজনীতি, বাংলার রাজনীতির পদাবলি: দাঙ্গা-দেশভাগ থেকে দলতন্ত্র দুর্বৃত্তায়ন, সমাজ গবেষণার পদ্ধতি (সঃ), ঝাড়খণ্ড: সমাজ ও বিদ্রোহ আন্দোলন, উদ্বাস্তু অনুপ্রবেশ সমস্যা ও জাতিনিধনের রাজনীতি (সঃ)।