Writer : Jayanta Dey
Edited By : NA
Compiled By : NA
Translated By : NA
Publishers : Mitra O Ghosh Publishers Pvt.Limited
- Shipping Time : 10 Days
- Policy : Return/Cancellation?
You can return physically damaged products or wrong items delivered within 24 hours with photo/video proof.
Contact Customer Support for return initiation and receive return authorization via email. Securely package for return.
Refunds for eligible returns are processed within 7-10 business days via Bank Transfer.
Order cancellation allowed within 24 hours of placing it. Standard policy not applicable for undamaged/wrong product cases. Detailed info. - Genre : Literature>Novels & Novellas
- Publication Year : 2023
- ISBN No : NA
- Binding : Paste Board (Hard) with Gel Jacket
- Pages : 465
- Weight : 600 gms
- Height x Width x Depth : 8.5x5.5x0.5 Inch
If so, it will be notified
About the Book
জয়ন্ত দে-র নতজানু শুধুমাত্র একটি উপন্যাস নয়, এটি এক যন্ত্রণাময় নগরের শোকগাথা। কলকাতার বদলে যাওয়া সমাজ ও রাজনীতির প্রেক্ষাপটে রচিত এই উপন্যাস কেবল শহরের এক অঞ্চল, কালীঘাটকে ঘিরে আবর্তিত হলেও পাঠকের সামনে তুলে ধরে সমগ্র কলকাতার এক বহুরৈখিক চালচিত্র। কালীঘাট এখানে নিছক একটি পটভূমি নয়—এটি নিজেই এক জীবন্ত চরিত্র, একাধারে সময়, সংস্কৃতি ও সমাজের প্রতীক।
উপন্যাসের কেন্দ্রে রয়েছে মুকুট, হালদার পরিবারের এক বালক, যে বড় হচ্ছে এক গোলমেলে সময়ের মধ্যে। সেই সময় যখন শহরের অলিতে গলিতে রাজনীতির দাপট, নকশালবাড়ির আন্দোলন, রক্তাক্ত আদর্শ ও বিশ্বাসঘাতকতার ছায়া গেরেছে। কিন্তু রাজনীতি এখানে ব্যানার, পোস্টার বা মিছিলেই সীমাবদ্ধ নয় — এটি চরিত্রদের রক্তে, গন্ধে, দেহে ও যাপনে মিশে রয়েছে। মুকুটের চোখে আমরা দেখি এক শহরের ভাঙাগড়ার গল্প। একটি সময়কে, একটি বোধকে।
এই উপন্যাসে শিশুদের জগৎ যেন এক কালো ও নিষিদ্ধ বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়ানো। পতিতাপল্লীর অন্ধকার গলি-ঘুপচির নোংরা বাস্তবতা তারা ছোটো বয়সেই জেনে যায়। মিছরি, পিন্টু, হাবুলেরা জানে কার মা রাতে ঘর ভাড়া দেয়, কার বাবা আসলে নেই, আর কে কখন "খানকি" হয়ে যাবে। নিষিদ্ধ পল্লীর বাস্তবতাকে জয়ন্ত দে নিছক সমাজবিরোধী তকমা দিয়ে নয়, এক মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করেছেন। এ এক শহর, যেখানে কোনও কিছুই ধোঁয়াশা নয়, সবই নগ্ন সত্য।
কালীঘাট মন্দির, আদি গঙ্গা, শ্মশান, পটুয়াপাড়া, হকার্স কর্নার, নির্মলহৃদয় — সব মিলিয়ে যে এক মহা-সমবেত কলকাতা, তার প্রতিটি শিরা-উপশিরায় প্রবাহিত হয়েছে এই উপন্যাসের আবেগ, ভাষা ও বাস্তবতা। পটচিত্রের মতো নয়, বরং ছিন্ন পটভূমির মধ্যে দাঁড়িয়ে কলকাতা নিজেই হয়ে উঠেছে এক ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি। ‘মোমো’কে ‘মাংসের পিঠে’ মনে করা কিংবা ‘চাউমিন’ দেখে বমি করা প্রতাপ সাহার ছেলের মতো চরিত্রগুলো যেন এক বিশুদ্ধ মধ্যবিত্ত সময়বোধের প্রতিবিম্ব।
রাজনীতির উত্তাপ, সাংস্কৃতিক অধঃপতন, পারিবারিক বিপর্যয় এবং মানবিক জটিলতার বহুস্তরীয় বিবরণে সমৃদ্ধ এই উপন্যাসে সময় একাধারে স্রোত, আবার প্রতিস্রোত। কালীঘাট অঞ্চল যেমন যেন এক প্রাচীন সাম্রাজ্য, তেমনি সেখানে বসবাসকারী মানুষগুলিও যেন সেই রাজ্যের বাসিন্দা—কেউ হারানো যোদ্ধা, কেউ শুধুই দর্শক, কেউ আবার নিঃশব্দ প্রতিরোধের প্রতীক।
‘নতজানু’-তে কোনও বাঁধাধরা গল্প নেই, নেই ক্লাইম্যাক্স, নেই নায়কোচিত উদ্ভাস। যা আছে তা হল সময়, সমাজ আর মানুষের অন্তর্লোকের বিশ্লেষণ। প্রতিটি দৃশ্য, প্রতিটি সংলাপ পাঠককে ঠেলে দেয় ইতিহাসের গভীরে, ব্যক্তিগত স্মৃতির অন্দরে। যে স্মৃতি শুধু মুকুটদের নয়, বরং শহরের, সমাজের, এবং সময়ের।
পাঠকের জন্য:
যারা চান বাংলা উপন্যাসে শুধু গল্প নয়, সমাজের গভীর বাস্তবতার প্রতিফলন দেখতে, যারা সাহিত্যে খোঁজেন শহরের বুকে গুমরে ওঠা মানুষের কান্না, দুঃস্বপ্ন, বিদ্রোহ—তাদের জন্য নতজানু হবে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। জয়ন্ত দে শুধু সময়ের কথা বলেননি, তিনি বলেছেন মানুষের কথা। আর সেই মানুষদের মুখে, চোখে, হৃদয়ে ফুটে উঠেছে এক নগরের জার্নাল—অতীত থেকে আজ পর্যন্ত টেনে আনা এক চিরন্তন কলকাতার প্রতিচ্ছবি।
নতজানু—এটি সময়ের, শহরের ও স্মৃতির নগ্ন ও নতজানু সত্য।