নতুন যুগে, নতুন প্রশ্নে—ফিরে এলো পরশুরাম।

‘পরশুরামের প্রত্যাবর্তন’ একটি থ্রিলারধর্মী পৌরাণিক-সমসাময়িক উপন্যাস, যেখানে দেবতা ও মানুষের সীমারেখা ঘোলাটে হয়ে যায়, ন্যায় ও প্রতিশোধ একে অপরের ছায়া হয়ে দাঁড়ায়।

পরশুরাম—ঋষি ও যোদ্ধা, করুণা ও নিষ্ঠুরতার বিপরীত দুই মেরুতে যিনি একসঙ্গে বাস করেন। যিনি ক্ষত্রিয়দের অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে ক্রুদ্ধ হয়ে একুশবার পৃথিবীকে রক্তরঞ্জিত করেছিলেন নিজের কুঠার হাতে, যিনি শিবের কাছ থেকে অমোঘ কুঠার লাভ করে নিজেই হয়ে উঠেছিলেন এক বিস্ময়কর শক্তির আধার—তাঁর কি সত্যিই শেষ আছে?

এই উপন্যাসে আমরা দেখি, পরশুরাম যেন নতুন রূপে ফিরে আসছেন। কিন্তু এবার তাঁর লক্ষ্য কেবল সামন্ততন্ত্র বা ধর্মীয় অধঃপতন নয়—এবার ক্রোধের জন্ম হয়েছে অনেক বেশি ব্যক্তিগত এক বিশ্বাসঘাতকতা থেকে। নিকৃষ্টতা, ভণ্ডামি, সুবিধাবাদ, এবং শুদ্ধতার নামে হিংসার যে গা-সওয়া বাস্তবতা, তারই মুখোমুখি হতে বাধ্য হচ্ছে মানুষ।

এই অনতিক্রম্য শক্তির মোকাবিলায় এবার দাঁড়ান একজন অবসরপ্রাপ্ত গোয়েন্দা—ঋষিকেশ। এক দশক আগে যার জীবন এক নির্মম হত্যাকাণ্ডে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল, আজ সে সেই পুরোনো ছায়ার সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিশোধ নিতে চায়। কিন্তু সে কি পারবে এই অমর শক্তিকে থামাতে? নাকি পরশুরাম আবারও ফিরে আসবে, বারবার, নতুন রূপে, নতুন ক্রোধে?

'পরশুরামের প্রত্যাবর্তন' একটি জটিল প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়—ধর্ম আর ন্যায়বিচারের নামে আমরা যা করি, তা যদি হয় সহিংসতার জন্মস্থল, তবে তার শেষ কোথায়? আমাদের সমাজ, বিচার ব্যবস্থা, আর ব্যক্তি হিসেবে আমাদের অবস্থান এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়ায় পরশুরামের ছায়ার নিচে।

পৌরাণিকতা আর মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলার একসঙ্গে মিলেমিশে এক নতুন অভিজ্ঞতা তৈরি করে এই উপন্যাসে। এই বই শুধু রোমাঞ্চ নয়, ভাবনার খোরাকও বটে। যদি আপনি অতীত ও বর্তমানকে একসঙ্গে দেখতে চান, পৌরাণিক চরিত্রের মাধ্যমে সমসাময়িক সমাজের আয়না খুঁজে পেতে চান—তবে এই উপন্যাস আপনার জন্যই।

এই গল্পে আছে দেবতা, মানুষ, প্রতিশোধ, বিবেক, ক্ষমা আর সেই চিরন্তন প্রশ্ন—কে ঠিক? কে ভুল?