রবীন্দ্রনাথের ভাবলোকে শিব ছিলেন ভারতীয় চেতনার এক অনন্য প্রতীক। দেবতা হিসেবে নয়, বরং নটরাজ রূপে তিনি হয়ে উঠেছেন মহাবিশ্বের নিয়ন্তা, সৃষ্টির অনন্ত প্রবাহের প্রতিফলন। এখানে নটরাজ কেবল নৃত্যরত শিব নন, তিনি বিষ্ণুক্ত—এক অনির্দিষ্ট আকাশদেবতা থেকে ঋতুর দেবতায় পরিণত এক অনন্য রূপ।

রবীন্দ্রনাথের ভাবনায় ঋতুবদলের মতোই নটরাজের রূপান্তর অবিরাম—প্রবীণ থেকে নবীন, শীত থেকে বসন্তে। দাক্ষিণাত্যকে ছাড়িয়ে তিনি পৌরাণিক চেতনায় মিশে গেছেন দূর প্রাচ্যের দর্শন ও ভারতীয় আধ্যাত্মিকতায়। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই শিব ও বিষ্ণুর সমন্বিত রূপের এক বৃহত্তর ধারণা গড়ে উঠেছে, যা ভারতীয় ভাবজগতে গভীর প্রভাব ফেলেছে।

এই পাঠ সেই জটিল ও বিচিত্র দেবকল্পনার সন্ধান দেয়, যা রবীন্দ্রনাথের মননে একান্তভাবে অন্তরঙ্গ হয়ে উঠেছিল। শিবের ভাবাদর্শ কীভাবে তাঁর চিন্তায় ও কাব্যে প্রতিফলিত হয়েছে, তা বুঝতে এই বিশ্লেষণ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।