সময়ের আয়নায় সমরেশ: পাঁচ উপন্যাসে শতাব্দীর সমাজপট

“আমি দেখি মানুষ, আমি লিখি মানুষ।”— সমরেশ বসু

এই গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে সমরেশ বসুর জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে লেখা পাঁচটি উজ্জ্বল উপন্যাস, যা সময়ের ভিন্নতাতেও এক সূত্রে গাঁথা—ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা বাংলার, তথা ভারতের, একশো বছরের সমাজ-ইতিহাস।

প্রথম পর্বে 'উত্তরঙ্গ' ও 'জগদ্দল' — যেখানে ধরা পড়ে ব্রিটিশ শাসনের প্রাথমিক বিস্তার ও সেই রূপান্তরের অভিঘাত।

 'ভানুমতী' ও 'ভানুমতীর নবরঙ্গ'  — এ দেখা মেলে ঊনবিংশ শতকের নবজাগরণ ও নারীচেতনার জাগরণ—যেখানে ব্যক্তিগত হয়ে ওঠে রাজনৈতিক।

 'শ্রীমতী ক্যাফে ' — শ্রমিক আন্দোলনের উত্থান ও সমাজের অদল-বদলের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষের জীবনের জটিল সমীকরণ তুলে ধরে।

 সবশেষে, 'খণ্ডিতা ' — দেশভাগের আগুনে পোড়া মানুষের বুকচিরে উঠে আসে এক শোচনীয় আত্মচিৎকার, যার মধ্যে জড়িয়ে থাকে নাড়ীর টান ও স্বদেশ-চেতনার গভীর আর্তি।

সমরেশ বসুর এই পাঁচটি উপন্যাস যেন সময়ের নানা পরত ছুঁয়ে গড়ে তোলে এক অনন্য আখ্যানভুবন। কখনও লোকায়ত কাহিনির ঢঙে, কখনও ইতিহাসের গর্ভ থেকে উঠে আসা বাস্তব চরিত্রের হাত ধরে, কখনও আবার ভবিষ্যতের স্রোতপথের ইঙ্গিত রেখে—এইসব উপন্যাসে লেখক মানুষের জীবন, যাপন ও জীবিকার বিচিত্র আবহমান রূপকে রূপ দিয়েছেন অসাধারণ ভাষাশৈলীতে।

এই গ্রন্থ শুধু সাহিত্যের সংকলন নয়—এ এক সমাজচিত্র, সময়চিত্র, এবং মানুষের নিরন্তর উত্তরণের দলিল।