হালকা ছায়া: ধোঁয়াটে স্মৃতি, পরিষ্কার রক্ত

হায়দ্রাবাদ—ইতিহাস আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় তৈরি এক স্বপ্নশহর, যার অলিগলিতে ছড়িয়ে আছে প্রাচীন রোমান্টিকতা আর কাঁচের মতো চকচকে আধুনিক যন্ত্রসভ্যতা। কিন্তু সেই স্বপ্নের পৃষ্ঠেই ধীরে ধীরে জমতে শুরু করেছে অন্ধকার ছায়া। কেউ বা কারা শহরের নীরবতা ফুঁড়ে একের পর এক খুন করে চলেছে—অদ্ভুত এক শৈল্পিকতা নিয়ে, যেন প্রতিটি খুনই একটা নিঃশব্দ কবিতা, যার ভাষা রক্ত, আর মাত্রা আতঙ্ক।

এস.আই.টি নামক বিশেষ তদন্তকারী দল সেই অদৃশ্য ঘাতকের ধাঁধা ভাঙতে নামে। তিনজন ব্যক্তি, তিন রকম দৃষ্টিভঙ্গি—

 রাজশেখর সেন, কলকাতার সন্তান, যুক্তির বুননে যিনি একেকটা ঘটনার সুতো ধরে জড়িয়ে ফেলেন রহস্যের জাল;

 অভয় ভেঙ্কটাচালাম, যার মস্তিষ্ক শীতল, কিন্তু চোখে ভয়ডরহীন দৃঢ়তা;

 আর ডঃ হৈমন্তী লাহিড়ী, মনস্তত্ত্বের পণ্ডিত, যিনি অপরাধীর মনের ভাঁজে ভাঁজে প্রবেশ করেন—তবে এবার অপরাধ নয়, তাকে তাড়া করে ফিরছে তার নিজের অতীত। অতীত, যা সে buried করে রেখেছিল অনেক আগেই।

হায়দ্রাবাদে পৌঁছেই রাজশেখরকে দেখে মুহূর্তেই থমকে যান ডঃ লাহিড়ী। পুরনো কোনো স্মৃতি? না কি অপূর্ণ এক সম্পর্ক, যা তার ভাবনাকে গ্রাস করতে চায় আবার? এ রহস্য কেবল শহরের খুন-রেখা নয়, এ এক মনস্তাত্ত্বিক খেলা—প্রেম, আকাঙ্ক্ষা, বিশ্বাসঘাতকতা আর অপরাধবোধের অসম চক্রব্যূহ।

তদন্ত যত গভীরে যায়, সত্য তত ধোঁয়াটে হতে থাকে। প্রশ্ন একটাই—খুন হচ্ছে কাদের, আর কাকে? অপরাধী কি সত্যিই অচেনা, না কি এই তিনজনের ভিতরেই কোনো ধোঁয়াটে ছায়া পায়ের শব্দ ফেলে হেঁটে চলেছে অজান্তে?

"আলো যত নিখুঁত হয়, ছায়া তত স্পষ্ট হয়।
 আর কিছু ছায়া একবার দেখলে চোখ ফেরানো যায় না—
 তারা থেকেও থাকে, না থেকেও থেকে যায়।"