মৃত্যু-মৃগয়া — এক রক্ত-মাখা ইতিহাস, এক বিস্মৃত ভবিষ্যৎ—একটা বর্শার খোঁচা থেকে শুরু হওয়া এক শ্বাসরুদ্ধকর অনুসন্ধান।

৩৩ খ্রিস্টাব্দ —

জেরুজালেমের উপকণ্ঠে গলগথার পাহাড়ে, এক যুবককে ক্রুশে টাঙিয়ে দেওয়া হলো। আর এক রোমান সেন্টুরিয়নের বর্শার খোঁচা সেই মুহূর্তকে পরিণত করল ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত উপকথায়। সেই বর্শা— লঞ্জিনাসের স্পিয়ার —শুধু রক্ত ঝরায়নি, জন্ম দিয়েছে এক অমোঘ ভবিষ্যতেরও।

এই বর্শার ছায়া পড়ে কিংবদন্তির রাজা আর্থারের সভায়, ছায়া ফেলে মধ্যযুগীয় জার্মানির সম্রাট ফ্রেডরিক বার্বারোসার উচ্চাকাঙ্ক্ষায়, এবং সর্বশেষে গিয়ে জড়িয়ে পড়ে ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত খলনায়ক অ্যাডলফ হিটলারের হাতে — তৃতীয় রাইখের অলৌকিক জয়ের আশায়।

তবে এই গল্প কেবল ইউরোপের নয়।

বর্শার রক্তমাখা ফলক ছুঁয়ে যায় কাশ্মীর উপত্যকাও।

ইয়ুজ আসফ, এক রহস্যময় সাধক, যাঁকে বহু গবেষকই যিশু খ্রিস্টের ভারতীয় অবতার বলে মনে করেন, যাঁর সমাধি রোজাবাল—আজও রয়েছে শ্রীনগরের গলিতে। সেই সমাধিতে রয়েছে পাথরে গেঁথে থাকা দুটি পায়ের ছাপ—যাতে নাকি দেখা যায় ক্রুশবিদ্ধতার ক্ষতচিহ্ন!

এই সমস্ত ইতিহাস, ধর্ম, কিংবদন্তি আর আধুনিক রাজনীতির মোড়কে লেখা হয়েছে “মৃত্যু-মৃগয়া”—একটা ঐতিহাসিক থ্রিলার, যেখানে অতীতের ভয়াবহতা এসে ধাক্কা মারে বর্তমানের বুকের ওপর। একজন স্মৃতিভ্রষ্ট মানুষ, যার অতীত ধূসর ও বিভ্রান্তিকর, জড়িয়ে পড়ে এই চিরকালীন অনুসন্ধানে — যেখানে stakes শুধুই সত্য নয়, বরং গোটা মানবজাতির ভবিষ্যৎ।

একদিকে রোমান সাম্রাজ্যের হিংস্রতা, অন্যদিকে নাৎসি জার্মানির অন্ধ বিশ্বাস, আর মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে ভারতবর্ষের এক শান্ত সমাধি — যার ভেতরে চাপা পড়ে আছে এমন এক সত্য, যা গোটা ইতিহাসকেই নতুন করে লিখতে বাধ্য করবে।

“মৃত্যু-মৃগয়া” শুধুমাত্র একটি থ্রিলার নয়, এ এক মিথ, ইতিহাস, ধর্ম আর সময়ের সীমা ছুঁয়ে বেরিয়ে যাওয়া দুঃসাহসিক যাত্রা।