মৃত্যুর রং নীল – আতঙ্ক, অস্তিত্ব আর অতিপ্রাকৃতের দ্বন্দ্বে ভরপুর দুটি উপন্যাস

দুটি আলাদা গল্প, দুটি আলাদা প্রেক্ষাপট—তবু একটিই সুর: ভয়, রহস্য আর অতিপ্রাকৃতের থমথমে উপস্থিতি। মৃত্যুর রং নীল বইটি দুটি অতিপ্রাকৃত উপন্যাসকে একত্রে নিয়ে এসেছে, যেখানে প্রতিটি গল্প পাঠককে নিয়ে যায় অজানার দরজায়, ছায়া আর আলোয় মোড়া এক রহস্যময় জগতে।

প্রথম উপন্যাস

লন্ডনবাসী বাঙালি তরুণ শরদ্বান পেশাগত কারণে পৌঁছে যায় এডিনবার্গে। সেখানে তার আলাপ হয় ক্লারা, অ্যানিস, কেনেথ আর জ্যাকের সঙ্গে—চার সাহসী তরুণ-তরুণী, যারা তাকে নিয়ে যায় শহরের রহস্যময় গলি ও ইতিহাসের অন্ধকার স্তরে। শরদ্বান ভাড়া নেয় এক পুরোনো, নির্জন বাড়ি—যেখানে প্রথম রাতেই তার সামনে উপস্থিত হয় এক অস্বাভাবিক দীর্ঘ ছায়া। তবে সে একা নয়, পাশে দাঁড়ায় ক্লারা আর তার বন্ধুরা। শুরু হয় এক ভয়াল সন্ধিক্ষণের মোকাবিলা। মধ্যযুগের প্যাঁচানো অলিগলির নিচে চাপা পড়ে থাকা এডিনবার্গ যেন পুনরুজ্জীবিত হয় এক ভয়ঙ্কর ছায়ার আকারে।

দ্বিতীয় উপন্যাস

কলকাতার তরুণ তনুময়, প্রেমিকা আদ্রিকার আপত্তি সত্ত্বেও চলে যায় পুরোনো বন্ধু ঋষাঙ্করের আমন্ত্রণে ঝাড়গ্রামে। কিন্তু স্টেশন থেকে দূরে, নির্জনতার মধ্যে থাকা ঋষাঙ্করের বাড়িতে গিয়ে সে খুঁজে পায় এক অদ্ভুত পরিবর্তিত মানুষ—যাকে সে চেনে, অথচ চেনে না। কে এই ঋষাঙ্ক? তার শরীর কি জীবিত মানুষের, নাকি সেখানে বাসা বেঁধেছে কোনো বিদেহী আত্মা? একের পর এক অলৌকিক ঘটনার ঘূর্ণিপাকে পড়ে, একসময় সম্পূর্ণরূপে নিজেকে হারিয়ে ফেলে তনুময়। পরদিন পুলিশ আর আদ্রিকা মিলে তাকে উদ্ধার করে, কিন্তু সে তখন এক ভিন্ন অভিজ্ঞতার গভীরে ডুবে আছে।

মৃত্যুর রং নীল শুধুমাত্র ভৌতিক গল্প নয়—এটি মানুষের ভেতরের ভয়, সাহস, বন্ধুত্ব আর বাস্তব ও অচেতনের সীমারেখা নিয়ে এক অনন্য অনুসন্ধান। দুই গল্পেই পাঠক আবিষ্কার করবেন, অতিপ্রাকৃতের উপস্থিতি হয়তো বাইরের নয়—এটি আমাদের অভ্যন্তরেই বসবাস করে, অপেক্ষায় থাকে জেগে ওঠার।

পড়ে ফেলুন মৃত্যুর রং নীল, যদি সাহস থাকে ছায়ার চোখে চোখ রাখার!