কালের অতলে কলিকাতা — অতীতের চশমায় বর্তমানের রূপ খোঁজার এক অনন্য প্রয়াস

"ফেলে আসা সময়ের কলকাতা নিয়ে নতুন করে আবার একটা বই মানেই যে তথ্যের পাহাড়, ইতিহাসের ভারে নুইয়ে পড়া পৃষ্ঠা, তা নয়। ‘কালের অতলে কলিকাতা’ বরং ইতিহাসকে দেখে অন্য চোখে—নতুন প্রেক্ষিতে, নতুন আলোতে।"

এই বইতে লেখক হাত দিয়েছেন এমন কিছু টুকরো ঘটনার পুনর্নির্মাণে, যেগুলো হয়তো পাঠ্যবইয়ের পাতায় অনুচ্চস্বরে উচ্চারিত হয়েছে, কিংবা মোটেই পায়নি জায়গা। কিন্তু সেগুলিই আজকের কলকাতার শরীর ও সত্তার অভিন্ন অংশ। বইটি তাই তথ্যের ছড়াছড়ির পরিবর্তে রেখেছে ব্যাখ্যার স্পর্শ, স্মৃতির পুনর্পাঠ এবং সময়চিহ্নের বিচারে পুরনো ঘটনাকে নতুন করে অনুধাবনের প্রয়াস।

এই লেখায় ইতিহাস শুধুমাত্র মুখ বুঁজে পড়ে থাকা কোনো অতীত নয়—বরং তা বর্তমানকে আয়নায় দেখে নিজেকে সংজ্ঞায়িত করে। কখনও তা বেগমের ‘প্রাইভেট পার্টি’র মতো এক চিমটি চমক, কখনও ‘অ্যাপ ক্যাবের ঠাকুরদা’র মতো শহরের অজানা ক্রনিকল, আবার কখনও বা ‘পরবর্তী স্টেশন ধাপা জং’ অধ্যায়ে নগরের অন্তঃসত্তা উন্মোচনের চেষ্টা।

‘কালের অতলে কলিকাতা’ পাঠককে দেয় এক অন্যধারার কলকাতা—যা শুধুই ইতিহাস নয়, বরং ইতিহাসের ছায়ায় দাঁড়িয়ে থাকা বর্তমানের রূপ ও রসায়ন। এমন এক বই, যা নস্টালজিয়ায় নয়, প্রশ্ন ও অনুসন্ধানে ঠাসা—নিশ্চয়তা নয়, বরং কৌতূহলের নিঃসন্দেহ প্রতিশ্রুতি।

এক নতুন কলকাতা, এক পুরনো শহরকে ফিরে পাওয়ার কাহিনি—ঠিক যেন স্মৃতির অলিতে গলিতে ছুটে চলা এক ঘাম-মাখা ট্রাম।