ঔপনিবেশিক শাসনে বাংলার ভূমিব্যবস্থার রূপান্তর

বাংলার ভূমি আইন ও ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থা চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের আগে কেমন ছিল, এবং কীভাবে ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ প্রশাসন তাদের দেশের ও ইউরোপের অন্য প্রধান দেশগুলোর ভূমিব্যবস্থা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ভারতবর্ষে এটি প্রয়োগ করতে চেয়েছিল—এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে বের করেছে এই বইটি। ৭৬ সালের মন্বন্তরের পর, কেন ব্রিটিশ শাসকরা এমন একটি বন্দোবস্ত ব্যবস্থা চালু করার সিদ্ধান্ত নিল, এবং এটি কি ইংল্যান্ডের মডেলের একটি হুবহু প্রতিলিপি ছিল?

এই বইটি চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রবর্তন, এর পরবর্তী বিতর্ক, এবং এর ঔপনিবেশিক প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ করে। শাসক দলের ভেতর কেন এত বিতর্ক হয়েছিল? ইউরোপীয় শিল্প বিপ্লব এর ভূমি ব্যবস্থায় কী প্রভাব ফেলেছিল? কেন বন্দোবস্ত চালু করার পরেও চল্লিশটিরও বেশি নতুন দেওয়ানি আইন প্রবর্তন করতে হয়েছিল? এবং এর পরও কৃষক বিদ্রোহ কেন থামানো গেল না?

এছাড়া, বইটি এদেশীয় রেনেসাঁর প্রভাবে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ভূমিকার দিকেও আলোকপাত করেছে, এবং চা ও পাট শিল্পের ইতিহাসে শোষণের প্রতিফলন কীভাবে ঘটেছিল, তা বিশ্লেষণ করে। কেন বাংলার ভূমি আইন এত জটিল হয়ে উঠেছিল, এবং কেন চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত শেষ পর্যন্ত ধ্বংস হয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল, সে প্রশ্নের উত্তরও এখানে পাওয়া যাবে।

এই বইটি শুধুমাত্র একটি ইতিহাসের ধারাবাহিক বর্ণনা নয়, বরং ঔপনিবেশিক আইনগুলোর মায়ানাতদন্ত করে, একে একে চিরে চিরে দেখা হয়েছে, যেন আমরা বাংলার ভূমি ব্যবস্থার রূপান্তরের প্রকৃত কারণগুলোর গভীরে পৌঁছতে পারি।