বাংলার দ্বাদশ ভৌমিক ও সমসাময়িক ভূমি ব্যবস্থা" গ্রন্থটি মধ্যযুগীয় বাংলার সমাজ ও প্রশাসনিক কাঠামোকে বোঝার জন্য এক অসাধারণ প্রামাণ্য রচনা। এই গ্রন্থে আলোচিত হয়েছে ‘দ্বাদশ ভৌমিক’ নামে পরিচিত এক বিশেষ শ্রেণির জমিদার বা ভূমিধারী গোষ্ঠী, যারা কেবলমাত্র স্থানীয় ক্ষমতা নয়, বরং বাংলার ভূমি ব্যবস্থার ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব বিস্তার করেছিল। লেখক সুস্পষ্টভাবে বিশ্লেষণ করেছেন এদের উৎপত্তি, সামাজিক অবস্থান, অর্থনৈতিক ভূমিকা ও রাজনৈতিক প্রভাব।

গ্রন্থে সমসাময়িক ভূমি ব্যবস্থার যে বিবরণ রয়েছে, তা ইতিহাসচর্চার একটি শক্তিশালী অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। খাজনা নির্ধারণ, ভূমি মালিকানা, কৃষক-জমিদার সম্পর্ক, রাজস্ব সংগ্রহ প্রক্রিয়া, এবং প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের প্রেক্ষিতে দ্বাদশ ভৌমিকদের স্থান ও ভূমিকা অত্যন্ত স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

তথ্যনির্ভরতা, প্রাচীন দলিলপত্র ও ঐতিহাসিক বিবরণীর সমন্বয়ে রচিত এই গ্রন্থটি ইতিহাস-গবেষকদের পাশাপাশি সমাজবিজ্ঞানী, নৃবিজ্ঞানী এবং সাধারণ পাঠকের কাছেও সমান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। এটি কেবল অতীতকে জানার জন্য নয়, বাংলার ভূমি রাজনীতির দীর্ঘ পরম্পরাকে বুঝবার একটি দরজা খুলে দেয়।

"বাংলার দ্বাদশ ভৌমিক ও সমসাময়িক ভূমি ব্যবস্থা" ইতিহাসচর্চায় এক অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ সংযোজন, যা পাঠককে ভাবায়, জানায় এবং অনুপ্রাণিত করে।