"প্রাণভোমরার সন্ধানে: বামপন্থার আর্থ-সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ" বইটি শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক বিশ্লেষণ নয়, বরং একটি গভীর মনস্তাত্ত্বিক যাত্রা, যেখানে বামপন্থার মুখোশ খুলে তার অন্তর্নিহিত শক্তি এবং প্রভাবের খোঁজ করা হয়েছে। লেখক দেবজ্যোতি চক্রবর্ত্তী অত্যন্ত তীক্ষ্ণ দৃষ্টিকোণ থেকে বামপন্থাকে বিশ্লেষণ করেছেন, যেখানে আমরা শুধু তার বাহ্যিক দিক বা প্রচলিত মতবাদ দেখি না, বরং তার অন্তর্গত "প্রাণভোমরা" বা মূল শক্তির সন্ধান পেয়েছি।

বামপন্থার যে চিরচেনা রাক্ষসের রূপ আমরা দেখেছি, লেখক তার মূলে গিয়ে খুঁজেছেন সেই রাক্ষসের প্রাণ — যে প্রাণ মানব সমাজের প্রতি তার প্রভাব বিস্তার করেছে। এই বইটি এমন এক যাত্রা, যেখানে বামপন্থার উৎপত্তি, তার ক্রমবিকাশ এবং বাংলার সামাজিক, সাংস্কৃতিক পরিবর্তনে এর ভূমিকা উন্মোচিত হয়েছে।

"প্রাণভোমরার সন্ধানে" বইটি শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক ইতিহাস নয়, বরং এটি বাংলার সমাজ এবং মনস্তত্ত্বের ওপর এক জটিল গবেষণা। লেখক বুঝিয়ে দিয়েছেন, বামপন্থা কোনও একক রাজনৈতিক দল বা মতাদর্শের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি একটি মনস্তাত্ত্বিক সত্তা যা সমাজের নানা স্তরে প্রবাহিত হয়েছে। বামপন্থা যখন বাংলার পরীক্ষাগার হয়ে উঠেছিল, তখন কীভাবে তার প্রভাব নৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক স্তরে গড়ে উঠেছিল, বইটি সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করেছে।

এই বইটি পাঠকের কাছে এমন একটি উপলব্ধি আনবে যেখানে বামপন্থা এবং তার ছদ্ম-বামপন্থী রূপ উন্মোচিত হবে। কোনো অজ্ঞাত সংকট বা সংকটের গোপন প্রেক্ষাপট ছাড়া সমাজকে বা রাজনীতিকে চেনা অসম্ভব। এই বইটির মাধ্যমে, আমরা সমাজের গভীরে গিয়ে বুঝতে পারব বামপন্থার উদ্ভবের কারণ, তার ক্রাইসিস, এবং এর মধ্যে লুকিয়ে থাকা জীবন্ত প্রাণ।

অতএব, যদি আপনি রাজনীতি, সমাজ এবং মনস্তত্ত্বের গভীর বিশ্লেষণে আগ্রহী হন, তবে "প্রাণভোমরার সন্ধানে" বইটি আপনার জন্য এক অপরিহার্য পঠন হবে। একদিকে যেমন এটি বামপন্থার জটিলতা উন্মোচন করে, তেমনি এটি আমাদের চিন্তার জগতে এক নতুন আলোকরেখা সৃষ্টি করবে।