“দিয়াং নদীর পরশপাথর” শোভন চক্রবর্তীর এক অনবদ্য অ্যাডভেঞ্চার গল্প, যেখানে দুই আলাদা জগতের কাহিনি এক সুতোয় গাঁথা। একদিকে, কলকাতার এক কিশোরের পাহাড়ি অভিযানে বেরিয়ে পড়া, আরেকদিকে, একটি প্রাচীন জার্মান ডায়েরি হাতে পাওয়া এক ব্যবসায়ীর জীবন—এ দুটি কাহিনী একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে পাঠককে এক অজানা জগতে নিয়ে যায়।

কিশোরটির আকর্ষণ ছিল মিটারগেজ রেলের সফরে, কিন্তু সে যে পথে পা বাড়ায়, সেই পথে এসে সে পড়ে যায় এক রোমান্টিক ফাঁদে, যা তাকে এক অদ্ভুত পাহাড়ি এলাকার গোলকধাঁধায় জড়িয়ে ফেলে। তার উদ্দেশ্য যখন ছিল পাহাড়ি পথে আনন্দের অভিজ্ঞতা, তখন হঠাৎ একেকটি অদ্ভুত মোড় তাকে এমন এক জায়গায় নিয়ে যায়, যেখানে তার জীবন আর নিজস্ব পরিচিত ট্র্যাকে ফিরে আসার উপায় থাকে না।

অন্যদিকে, এক ব্যবসায়ী জীবনের অভ্যস্ত কলকাতার নাগরিক, যিনি হঠাৎই হাতে পেয়ে যান একটি বহু পুরনো জার্মান ডায়েরি। ডায়েরির পাতায় পাতায় মেলে রুশ সিক্রেট সার্ভিস, চক্রান্তের গোপন আভাস, এবং এক অজানা সুপারহিরোর কাহিনি, যার নাম কেউ জানে না। সেই ডায়েরির রহস্য উদঘাটন করতে করতে, ক্রমশ উঠে আসে স্ট্যালিন এবং তার শত্রুদের কাহিনি, এবং সব কিছু মিলিয়ে এক অদ্ভুত সমাপ্তি ঘটে, যা শেষ পর্যন্ত পাঠককে চমকে দিয়ে যায়।

এই বইতে শোভন চক্রবর্তী একদিকে পাঠককে প্রবাহিত করেন রোমান্টিক অভিযানে, আর অন্যদিকে তিনি ছড়িয়ে দেন রহস্যময় ইতিহাসের গভীরতার দিকে। দুটি সমান্তরাল কাহিনি, দুটি ভিন্ন জগতের খোঁজ, সবশেষে মিলিত হয়ে তৈরি করে এক অনন্য গল্প। “দিয়াং নদীর পরশপাথর” পড়তে বসে পাঠক বুঝতে পারবেন, শেষ পৃষ্ঠায় গিয়ে কীভাবে সব কিছু সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার হয়ে ওঠে।