ছোট্টবেলা থেকেই কবিতাই ছিল তার খেলনা, আশ্রয়, আর অভ্যেস। দাদুর শোনানো ছড়া, বাবার আবৃত্তি, মায়ের নরম গলা, দিদির টুকটাক লিখে দেওয়া শব্দেরা—সব মিলিয়ে পারমিতার শৈশব ছিল এক ছন্দময় জগত। নিজের একলা সময়েও একমাত্র সঙ্গী ছিল ডায়েরি, যার সাদা পাতাগুলো পরিণত হতো তার হৃদয়ের প্রতিচ্ছবিতে। চাঁদ, আকাশ, নদী, সমুদ্র—এই চিরন্তন উপাদানগুলোর সঙ্গে মিশে যেত প্রথম প্রেমের রঙ, আবেগ, আকুলতা।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কবিতাও রূপ বদলেছে। কখনও আত্মকথা, কখনও নিঃশব্দ প্রতিবাদ, কখনও নিখাদ ভালোবাসার বার্তা হয়ে এসেছে তার কলমে। বিবাহোত্তর জীবনে শাশুড়িমার অনুপ্রেরণায় যেন নতুন সুরে বেজে উঠল তার কবিতারা। আর তারপর—জ্যোতিষ ও আধ্যাত্মিক জীবনে প্রবেশ।

এই পর্যায়ে পারমিতার কবিতায় যেন ঘটে গেল আত্মার জাগরণ। সব আবেগ, সব প্রেম, সব রূপ, সব রস—সবকিছুর কেন্দ্রে এসে দাঁড়ালেন শ্রীকৃষ্ণ। তিনি যেন শুধু ধর্মীয় পুরুষ নন, তিনি প্রকৃতি, প্রেম, এবং চেতনার এক চিরন্তন উৎস।

এই উপলব্ধির গহ্বরে ডুব দিয়ে জন্ম নিল ‘সম্মোহনের রং’—এক অনন্য কবিতাগুচ্ছ, যেখানে প্রেম আর পরম সত্য মিলেমিশে গড়ে তোলে এক সম্মোহনময় আখ্যান। পাঠকের হৃদয়কেও সে টেনে নিয়ে যাবে এক অনির্বচনীয় অনুভবের দিকে—যেখানে কবিতা হয়ে ওঠে ভক্তি, জীবন হয়ে ওঠে ছন্দ।