এই বইটি বাঁকুড়া জেলার নদী-কেন্দ্রিক প্রাচীন জনপদগুলির স্থাপত্য ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনকে উপজীব্য করে রচিত। দামোদর, দ্বারকেশ্বর, শিলাবতী ও কংসাবতী নদীর অববাহিকায় গড়ে ওঠা সভ্যতা ও স্থাপত্য নিদর্শনগুলির বস্তুনিষ্ঠ বিবরণ ও বিশ্লেষণ স্থান পেয়েছে বইটিতে। মল্লভূমের ইতিহাস, সামন্তভূমের স্বকীয় গৌরব, শিখরভূমের প্রত্নস্থল, টেরাকোটা মন্দিরের পৌরাণিক কাহিনি, নদী অববাহিকার পুরাকীর্তি, এবং স্থানীয় প্রত্নপ্রাচুর্য—সবকিছুরই নিখুঁত বিবরণ মেলে এই গ্রন্থে।

একসময় “বহুরূপে বাঁকুড়া” পত্রিকায় প্রকাশিত এই গবেষণার আংশিক রূপ পাঠকের বিপুল আগ্রহ পেয়েছিল। সেই আগ্রহ ও চাহিদার পরিপূর্ণতা দিতেই প্রকাশিত হয়েছে এই সংকলন গ্রন্থ। বইটি গবেষক, ইতিহাস অনুরাগী ও সাধারণ পাঠক – সকলের কাছেই এক মূল্যবান সম্পদ।

বইটির বিশেষ আকর্ষণ এর তথ্যসমৃদ্ধ ও প্রামাণ্য প্রবন্ধসমূহ। ৩১ জন গবেষক ও ক্ষেত্রসমীক্ষকের ৩৬টি মৌলিক গবেষণাধর্মী রচনা এই বইটিকে সমৃদ্ধ করেছে। প্রতিটি প্রবন্ধে রয়েছে বাঁকুড়ার প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শনের বিস্তারিত বিবরণ ও ক্ষেত্রসমীক্ষার ফলাফল। আলোকচিত্রে সজ্জিত এই বইটি বাঁকুড়ার প্রাচীন নিদর্শনের মর্ম স্পর্শে সাহায্য করবে।

এই বই পড়ে পাঠক একদিকে যেমন বাঁকুড়ার নদী-অববাহিকার সভ্যতা-চিত্রের স্বাদ পাবেন, তেমনই প্রাচীন নিদর্শনের দালিলিক প্রমাণের আলোকে মল্লভূমের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন। গবেষণা কিংবা সাধারণ পাঠ – উভয়ের ক্ষেত্রেই বইটি এক অপরিহার্য সংযোজন।