এই বইয়ে ধরা আছে এক অনন্য যাত্রাপথের অভিজ্ঞতা—পৃথিবীর এক প্রান্তে, চিরবরফে মোড়া গ্রীনল্যান্ডে যাযাবর এস্কিমোদের জীবন, সংস্কৃতি ও সমাজব্যবস্থার এক অন্তরঙ্গ পর্যবেক্ষণ। লেখক বিমল দে তাঁর ব্যক্তিগত ডায়েরির বিচ্ছিন্ন অভিজ্ঞতাগুলোকে গ্রন্থনা করে রচনা করেছেন এই ভ্রমণ-বিষয়ক প্রামাণ্য বিবরণ।

বিষয়বস্তু:

বইটি মূলত এস্কিমো জাতিগোষ্ঠী ও গ্রীনল্যান্ডের ভূপ্রকৃতি, ইতিহাস এবং জনগোষ্ঠী নিয়ে রচিত একটি গবেষণাভিত্তিক ভ্রমণকাহিনি। লেখক, কোন পূর্বপরিকল্পনা ছাড়াই এক আমেরিকান হেলিকপ্টার চালকের সহায়তায় গ্রীনল্যান্ডে প্রবেশ করেন। তাঁর সঙ্গে থাকে তাঁর বিশ্বস্ত সঙ্গী—একটি সাইকেল, যেটিকে বরফঢাকা দেশে নিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা যেমন অদ্ভুত, তেমনই কৌতূহলোদ্দীপক।

বইটি পাঠককে পরিচিত করিয়ে দেয়:

• গ্রীনল্যান্ডের ভূগোল, জলবায়ু ও প্রাণীজগতের বৈচিত্র্যের সঙ্গে
• ইতিহাসবিহীন এক দেশের বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক ও সামাজিক কাঠামোর সঙ্গে
• বিখ্যাত অভিযাত্রী ক্নুড রাসমুসেন-এর জীবন ও গ্রীনল্যান্ড অনুসন্ধানের অভূতপূর্ব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে
• এস্কিমোদের উৎপত্তি, নৃগোষ্ঠীগত বৈশিষ্ট্য, জীবনধারা, ধর্মবিশ্বাস এবং আধুনিক সভ্যতার আগ্রাসনে তাদের সাংস্কৃতিক পতনের করুণ চিত্রের সঙ্গে,
• গ্রীনল্যান্ডের এস্কিমো নিছক কোনো পর্যটনের রোজনামচা নয়—এ এক অপ্রচলিত নৃ-ঐতিহাসিক আর সাংস্কৃতিক অন্বেষণের দলিল।

গ্রীনল্যান্ড ও এস্কিমোদের প্রসঙ্গে:

গ্রীনল্যান্ড, যার আসল নাম গ্রোয়েনল্যান্ড, এক বিশাল, শীতপ্রধান, নির্জন ভূখণ্ড। এখানে রাজা নেই, যুদ্ধ নেই, নেই কোনো প্রাচীন সভ্যতার চিহ্ন। শুধু আছে বরফ, প্রাণী, মাছ আর ছিটেফোঁটা মানুষ—যারা ‘সভ্যতা’ নামক মোড়কে আস্তে আস্তে তাদের ঐতিহ্য হারাচ্ছে। লেখক তীব্র অনুভবের সঙ্গে তুলে ধরেছেন এস্কিমোদের ভাঙন, ডেনিশ শাসনের প্রভাব এবং আধুনিকতার পরিণতিকে।

কেন পড়বেন এই বইটি?

• গ্রীনল্যান্ড ও তার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর এক অনুপম ও সংবেদনশীল চিত্রণ
• একান্ত ভ্রমণানুভবের মধ্যে ফুটে ওঠা বৈজ্ঞানিক ও নৃগোষ্ঠীয় বিশ্লেষণ
• তথ্যনিষ্ঠ অথচ আবেগময় ভাষায় রচিত, সাহিত্যিক ঋজুতা নয়, বরং ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণের সোজাসাপ্টা বর্ণনা
• যাযাবরদের হারিয়ে যাওয়া পৃথিবীর আখ্যান, যেটি পড়লে পাঠক উপলব্ধি করবেন সভ্যতার অন্ধ দৌড়ের বিপরীতে থাকা এক পৃথিবীর কথা

এই বইটি তাদের জন্য যারা খাঁটি ভ্রমণ কাহিনি ভালোবাসেন, যারা কৌতূহলী হয়ে জানতে চান পৃথিবীর প্রান্তবর্তী এক মানবগোষ্ঠীর জীবনচর্যা—একদম ভেতর থেকে।