প্রবাসের নীরবতা, দূরত্বের যন্ত্রণা, স্মৃতির ধূলিমাখা ছবি—এসবই বারবার ফিরে আসে অজাতশত্রুর লেখায়। তাঁর প্রতিটি গল্প যেন একেকটি জীবনরেখা, যার মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায় পরিচিত মানুষ, হারিয়ে যাওয়া মুহূর্ত, আর কাকতালীয় ভাবে জড়িয়ে যাওয়া সম্পর্কের জটিল মানচিত্র।

"কাকতালীয়" এমনই এক গল্পসম্ভার—যেখানে আপাত সাধারণ ঘটনা ও মানুষের জীবন কাকতালীয়ভাবে একে অপরকে ছুঁয়ে যায়, বদলে দেয় সবকিছু। এই গল্পগুলোতে নেই কোনও অতিনাটকীয়তা, নেই কৃত্রিম নাটকীয় দ্বন্দ্ব—বরং জীবনের ভেতরের সূক্ষ্ম টানাপোড়েন, নৈমিত্তিক ঘটনার গভীর প্রভাব, আর সম্পর্কের মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ মিলেমিশে তৈরি করেছে এক চিন্তাশীল ও অনুভবময় সাহিত্যভুবন।

মুম্বাইয়ের কর্মব্যস্ত পেশাজীবন আর বিদেশী পরিবেশের মধ্যে থেকেও লেখকের হৃদয়ে গেঁথে থাকা বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি তাঁর গল্পগুলোতে প্রাণ পায় নতুনভাবে। জীবনের জটিলতা, ভালোবাসার অমোঘ আকর্ষণ, বিচ্ছেদ, পুনর্মিলন—সব কিছুই রয়েছে, কিন্তু এক অনন্য মৌনতায়, এক আত্মস্থ আখ্যানভঙ্গিতে।

"কাকতালীয়"-র প্রতিটি চরিত্র—চেনা মনে হলেও রহস্যময়, স্বাভাবিক হয়েও অনিশ্চিত। তারা আমাদের মতোই, আমাদের আশেপাশের মানুষ, কিন্তু কাকতালীয়ো এক ঘটনার পর তারা হয়ে ওঠে গল্পের নায়ক বা নায়িকা—এ যেন জীবনের মঞ্চে হঠাৎ আলো এসে পড়া।

এই বইটি কাদের জন্য?

যারা মানবিক সম্পর্কের জটিলতা, নগরজীবনের বাস্তবতা, এবং আধুনিক বাঙালির আত্মপরিচয়ের টানাপোড়েন-কে সাহিত্যে খুঁজে বেড়ান, তাঁদের জন্য "কাকতালীয়" এক অনিবার্য পাঠ। প্রবাসে থেকেও যারা বাংলার টান ভুলতে পারেননি—এই বইটি তাঁদের হৃদয়ের খোরাক।

অজাতশত্রুর লেখনী আমাদের বারবার মনে করিয়ে দেয়—জীবন নিজেই সবচেয়ে বড় কাহিনি, আর কাকতালীয় ঘটনাগুলোই হয়তো সেই গল্পের আসল চালিকা শক্তি।

“জীবন কি সত্যিই কাকতালীয়? না কি সবই নিয়তি?” – অজাতশত্রুর কলমে উত্তর খুঁজে পান।

[Old Book, copies may carry disputed pages]

[Publication help: Gargi Prakashani, 63 Ananda Palit Rd, Kol-14]