Welcome to Dorlink
Selected Books
×
Ami Bhalo Nei, Tumi Bhalo Theko Priyo Desh - Atmajibani Vol-5

Writer : Taslima Nasrin

Edited By : NA

Compiled By : NA

Translated By : NA

Publishers : Peoples Book Society

  • Shipping Time : 10 Days
  • Policy : Return/Cancellation?

    You can return physically damaged products or wrong items delivered within 24 hours with photo/video proof.
    Contact Customer Support for return initiation and receive return authorization via email. Securely package for return.

    Refunds for eligible returns are processed within 7-10 business days via Bank Transfer.
    Order cancellation allowed within 24 hours of placing it. Standard policy not applicable for undamaged/wrong product cases. Detailed info.

  • Genre : Literature>Autobiography & Biography
  • Publication Year : 2024
  • ISBN No : 81-85383-49-9
  • Binding : Paste Board (Hard) with Gel Jacket
  • Pages : 320
  • Weight : 499 gms
  • Height x Width x Depth : 8.5x5.5x0.5 Inch
MRP : ₹400.00/- Discount : 18% Off
Your Price : ₹330.00/-
MRP is subject to change as per edition/impression by the publisher.
If so, it will be notified

About the Book

নামেই কষ্ট—"আমি ভালো নেই, তুমি ভালো থেকো প্রিয় দেশ "। যেন এক দীর্ঘশ্বাসে লেখা একটি বই। একান্ত প্রিয় দেশ, প্রিয় ভাষা, প্রিয় মানুষদের উদ্দেশে লেখা এক চিঠি—যেখানে প্রতিটি বাক্যে জড়িয়ে আছে নিঃসঙ্গতা, শূন্যতা, ভালোবাসা আর অভিমান।

তসলিমা নাসরিনের আত্মজীবনীর পঞ্চম খণ্ডে আমরা দেখি এক পরিপূর্ণ নির্বাসিতা। এই বইয়ে নেই চিৎকার, নেই সোজাসাপ্টা ঘোষণা—বরং আছে ভেতর থেকে ফেটে বেরোনো নীরব কান্না। লেখিকা তখন রাষ্ট্রহীন, ঘরহীন, ঠিকানাহীন। সুইডেনে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছেন বটে, কিন্তু তা যেন এক ঠান্ডা কাচের খাঁচা—যেখানে তিনি একজন "নিরাপদ" বন্দি।

এই খণ্ডে তসলিমা লেখেন তাঁর বিদেশজীবনের অভিজ্ঞতা, ভৌগোলিক দূরত্বের থেকেও বড় যেটি—তা হলো সাংস্কৃতিক বিচ্ছিন্নতা। প্রিয় ভাষা থেকে ছিটকে পড়া, পরিচিত মুখগুলোর অনুপস্থিতি, নতুন সমাজের মধ্যে দাঁড়িয়ে আপন হতে না পারার দুঃখ—সবকিছু মিশে আছে প্রতিটি পাতায়। তবে এটুকু শুধু কষ্টের বর্ণনা নয়। এই বই এক মানসিক শক্তির দলিল—যেখানে ভেঙে পড়েও মানুষ বেঁচে থাকে, কলম চালায়, এবং মন খুলে বলে ফেলে সেই কথাগুলো, যা বলা হয়ে ওঠেনি। এই বইয়ে পাঠক প্রত্যক্ষ করবে একজন নারীর অন্তর্জগত—যিনি প্রশ্ন করতে করতে ক্লান্ত, কিন্তু প্রশ্নহীন হতে পারেন না। দেশ থেকে বিতাড়িত হলেও দেশ তাঁকে আজও দগদগে করে রাখে। আর তাই বইটি এক ধরনের আত্মিক চিঠি হয়ে ওঠে বাংলাদেশের উদ্দেশে—ভালোবাসায় ভরা, অথচ অভিমানে জর্জরিত।

এই খণ্ডে তসলিমা আরও ব্যক্তিগত, আরও আত্মবিশ্লেষণধর্মী। তিনি বলেন তাঁর ভেতরের অনাস্থা, হতাশা, বিষণ্নতা আর ফিরে যেতে না পারার অসহায়তা নিয়ে। কখনও শান্ত স্বরে, কখনও দার্শনিকভাবে, আবার কখনও খোলা চিঠির মতো হৃদয় উজাড় করে। বিষয়ের গভীরতায় যাত্রা করলে পাবো :

  • নির্বাসন ও বিচ্ছিন্নতা:

এই খণ্ডের প্রধান আবহ তৈরি হয়েছে নির্বাসনকে ঘিরে। নিজের জন্মভূমি তাকে ত্যাগ করেছে, এমনকি তার নামটিও যেন উচ্চারণযোগ্য নয় মাতৃভাষার মাটিতে। অথচ লেখিকার হৃদয়ে সেই দেশ আজও অমোচনীয়ভাবে গেঁথে আছে। প্রতিটি স্মৃতি, প্রতিটি চেনা রাস্তা, মুখ, দৃশ্যপট—সবই ধোঁয়াটে হয়ে গেলেও মুছে যায় না।

  • ভাষাহীনতার বেদনা:

বিদেশে, নতুন ভাষা, নতুন সংস্কৃতি—কিন্তু তসলিমা যেন এক পরিত্যক্ত ভাষার লেখক। পাঠকের সামনে ফুটে ওঠে, কীভাবে একজন সাহিত্যিক, যাঁর অস্তিত্ব গড়ে উঠেছে ভাষা আর লেখার মাধ্যমে, তিনি ভাষাহীন হয়ে পড়েন এক নতুন ভূগোলে। শিকড় উপড়ে গেলে কীভাবে বেঁচে থাকতে হয়, তা বোঝা যায় তার প্রতিটি বাক্যে।

  • মানবিক সম্পর্কের ভাঙন:

এই খণ্ডে একাধিক ব্যক্তিগত সম্পর্কেরও অবসান ঘটে। প্রেম, বন্ধুত্ব কিংবা সাহচর্য—সবই ভেঙে পড়ে এক এক করে। তিনি এসব সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতও বিশ্লেষণ করেছেন, যেন বোঝাতে চান, একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত (নির্বাসন) কীভাবে একজন মানুষের ব্যক্তিগত সম্পর্কগুলোকেও ধ্বংস করে দিতে পারে।

  • একজন নারীর লড়াই ও মানসিক দ্বন্দ্ব:

এই বইয়ে তসলিমা একজন দেশহারা লেখিকা নয় শুধু, তিনি একজন নারীবাদী চিন্তক, যিনি বিশ্বাস করেন—মুক্তচিন্তার জন্য যে কোনো মূল্য দিতেই হবে। কিন্তু সেই মূল্য যখন আপনজন হারানোর, নিজেকে হারানোর, তখন প্রশ্ন জাগে—এই মূল্য কি ন্যায্য? তিনি লড়াই করেন না শুধু বাইরের শত্রুর সঙ্গে, বরং নিজের গভীর একাকীত্ব, হতাশা, অবসাদের সঙ্গেও প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে চলেন।

ভাষার ধরন ও লেখার ভঙ্গি:

তসলিমার ভাষা এই খণ্ডে হয়ে উঠেছে আরও ধীর, আরও অভ্যন্তরীণ। নেই আগের খণ্ডগুলোর তীব্র প্রতিবাদের সুর—বরং এক ধরনের স্থির বিষণ্নতা। তবু মাঝে মাঝে সেই আগুন ঝরা স্পষ্টভাষার ঝলক পাঠককে চমকে দেয়। তিনি কখনো যেন দিনলিপি লিখছেন, কখনো চিঠি, আবার কখনো লিখে চলেছেন নিজের জন্যেই এক ব্যক্তিগত ইতিহাস।

"আমি ভালো নেই, সত্যিই না।
এই দুনিয়ার সবচেয়ে নিরাপদ শহরেও আমি আজ সবচেয়ে অনিরাপদ।
তুমি ভালো থেকো প্রিয় দেশ, কারণ তুমিই তো আমার সব ছিলে।"   
"প্রতিদিন ভাবি, আমি কি ভুল করলাম? নিজের সত্য বলার অপরাধে আজ আমি নির্বাসিত—এ কি আমার অপরাধ, না এই সমাজের আত্মপ্রবঞ্চনা?"           ~ তসলিমা নাসরিন

বইটি কেন গুরুত্বপূর্ণ:

  • এটি শুধুমাত্র একজন লেখিকার আত্মজীবনীর খণ্ড নয়, বরং সমকালীন রাষ্ট্রের সঙ্গে এক লেখক-মানুষের সম্পর্কচ্যুতির দলিল।
  • বাংলা সাহিত্যে এমন নির্মম সততা, এমন ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক আত্মসমালোচনা বিরল।
  • যারা নির্বাসিত জীবন, সাংস্কৃতিক বিচ্ছিন্নতা, এবং আত্মপরিচয়ের টানাপোড়েন বোঝতে চান—তাঁদের জন্য বইটি অনন্য।

"আমি ভালো নেই, তুমি ভালো থেকো প্রিয় দেশ" একটি হৃদয়বিদারক নীরব আহ্বান। এটি এমন এক আত্মজীবনী যা কাঁদে—শব্দে, বাক্যে, নিঃশব্দে। এই বই পড়া মানে একজন মানুষকে পড়া, যিনি হারান, তবু হেরে যান না। এটি এক বহিষ্কৃত কণ্ঠের নথি, যা কেবল লেখিকার নয়—যে কোনো ব্যক্তি, যে কখনো নিজভূমে পরবাসী হয়েছে, তার।