Writer : Taslima Nasrin
- Shipping Time : 10 Days
- Policy : Return/Cancellation?
You can return physically damaged products or wrong items delivered within 24 hours with photo/video proof.
Contact Customer Support for return initiation and receive return authorization via email. Securely package for return.
Refunds for eligible returns are processed within 7-10 business days via Bank Transfer.
Order cancellation allowed within 24 hours of placing it. Standard policy not applicable for undamaged/wrong product cases. Detailed info. - Genre : Literature>Autobiography & Biography
- Publication Year : 2023
- ISBN No : 81-85383-55-3
- Binding : Paste Board (Hard) with Gel Jacket
- Pages : 256
- Weight : 499 gms
- Height x Width x Depth : 8.5x5.5x0.5 Inch
If so, it will be notified
About the Book
"নেই, কিছু নেই" — এই শিরোনামটি যেন এক দীর্ঘশ্বাস। যেন সমস্ত চাওয়া, সমস্ত আশা, সমস্ত অপেক্ষার পরিণতিতে শুধুই শুন্যতা। তসলিমা নাসরিনের আত্মজীবনীর ষষ্ঠ খণ্ডটি এক নিঃসঙ্গ জীবনবীক্ষণের দলিল, যেখানে নেই কোনো গন্তব্য, নেই কোনো আশ্রয়, নেই এমনকি কারও অপেক্ষাও।
পূর্ববর্তী খণ্ডগুলোতে আমরা দেখেছি একজন মানুষের দেশছাড়া হওয়ার যন্ত্রণা, এক নারীর লড়াই, সাহসিকতা, প্রতিবাদ। কিন্তু "নেই, কিছু নেই"-এ সেইসব ক্ষরণ ধীরে ধীরে রূপ নেয় এক অন্তর্গত নীরবতার। এই বই পড়লে মনে হয়—লেখক তসলিমা আর চিৎকার করছেন না, তিনি এখন নিঃশব্দে ভেঙে পড়ছেন, অথবা স্থিরভাবে তাকিয়ে আছেন নিজের চারপাশের শূন্যতায়। বইটির মূল আবহ ও থিম হল -
- চরম একাকীত্ব:
এই খণ্ডে তসলিমার ব্যক্তিজীবন আরও নির্জন, আরও নিঃসঙ্গ। আশেপাশে নিরাপদ শহর, উন্নত জীবনযাপন, বইপ্রকাশ, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি—তবুও কিছু নেই। সম্পর্ক নেই, ঘর নেই, ভালোবাসা নেই, এমনকি স্পর্শ বা আত্মিক যোগাযোগও যেন নিঃশেষ।
- প্রতিচ্ছবির সঙ্গে মুখোমুখি:
এই বই যেন লেখিকার এক দীর্ঘ আত্মজিজ্ঞাসার প্রক্রিয়া। তিনি ফিরে দেখেন অতীত, সম্পর্ক, ভালোবাসা, বিশ্বাসঘাতকতা, ভাঙন—সব কিছু। তিনি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে বোঝার চেষ্টা করেন, কী হারালেন, কেন হারালেন, এবং শেষমেশ—হারানোর বাইরেও কিছু কি অবশিষ্ট থাকে?
- ভাষাহীনতা ও মূক স্বাধীনতা:
তসলিমা বারবার বলেছেন, ‘আমি মুক্ত, কিন্তু আমি বন্দি’। এই খণ্ডে সেই বক্তব্য আরও স্পষ্ট। লেখালেখির স্বাধীনতা থাকলেও সেখানে আত্মার আশ্রয় নেই। তিনি যেন এমন এক গাছে পরিণত হয়েছেন, যার মাটি নেই, পানি নেই, তবু বেঁচে আছেন শুধুমাত্র অভ্যাসে।
লেখার ভঙ্গি ও ভাষার বৈশিষ্ট্য:
"নেই, কিছু নেই"–এ তসলিমার ভাষা আগের খণ্ডগুলোর তুলনায় আরও সংযত, আরও গভীর। নেই আগুনঝরা প্রতিরোধের ধ্বনি, নেই আক্রমণাত্মক ঘোষণাও। বরং ভাষা এখানে মৃদু, আত্মমগ্ন, কখনও ডায়েরির মতো, কখনও স্মৃতিকাতর গদ্যের মতো। প্রতিটি বাক্যে এক ধরণের ক্লান্তি কাজ করে—যা পাঠকের মনের গভীরে গিয়ে বাজে।
কী কী রয়েছে বইটিতে?
- ব্যক্তিগত সম্পর্কের অতীত পুনর্মূল্যায়ন
- ভালোবাসা ও ভরসার পচন
- এককভাবে বেঁচে থাকার মানসিক প্রস্তুতি
- অস্তিত্ব সংকট ও আত্মপরিচয়ের ক্ষয়
- মানুষ, দেশ ও ঈশ্বরকে কেন্দ্র করে অন্তর্জগতের আলোচনা
একটি উদ্ধৃতি:
“যে জীবনকে আমি আঁকড়ে ধরেছিলাম, সে-জীবনই আমাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে।
এখন কিছু নেই। আমি নিজেকেও খুঁজে পাই না।”
পাঠকের জন্য এই বই কেন মূল্যবান?
- এটি একটি আত্মজীবনীর চূড়ান্ত শূন্যতার অধ্যায়—যেখানে পাঠক নিজেকেও খুঁজে পেতে পারেন।
- সম্পর্ক, প্রত্যাশা, ও প্রাপ্তির শেষ সীমানা কোথায় গিয়ে ঠেকে—তা উপলব্ধি করা যায়।
- বিশেষ করে যারা মানসিক নিঃসঙ্গতা, বিচ্ছিন্নতা ও অন্তর্জ্বালার অভিজ্ঞতার সঙ্গে পরিচিত—এই বই তাঁদের জন্য এক বিপুল আত্মস্বর।
"নেই, কিছু নেই" হলো তসলিমা নাসরিনের আত্মজীবনের এক নিঃশেষ সময়ের দলিল। যেখানে বাহ্যিক সাফল্যের বিপরীতে দাঁড়িয়ে আছে সম্পূর্ণ মানসিক একাকীত্ব। এই বই পড়ে পাঠক বোঝেন, সত্যিকারের নির্বাসন কেবল ভৌগোলিক নয়—এটি মানসিক, আত্মিক, এমনকি ভাষাগতও হতে পারে। তসলিমার ষষ্ঠ খণ্ড এমন এক আত্মজীবনী যা শূন্যতা দিয়েই ভরে তোলে পাঠকের মন। এটি পড়া মানে নিজেকে প্রশ্ন করা—‘আমার আছে কি? যদি না-ও থাকে, আমি টিকে আছি কীভাবে?’