“খাজুরাহো” শুধু এক ঐতিহাসিক স্থান বা ভ্রমণবর্ণনা নয়, এটি মধ্যপ্রদেশের খাজুরাহো মন্দিরসমূহের স্থাপত্যশিল্প, মূর্তিকলা ও তাদের গভীর অর্থ নিয়ে একটি ব্যাপক ও গভীর গবেষণা। খাজুরাহো, যেখানে চন্দেল রাজবংশের হাতে নির্মিত অসাধারণ মন্দিরসমষ্টি ভাস্কর্যের এক মহা কারুকার্যের নিদর্শন, বাংলা ভাষায় এমন সরল ও তথ্যপূর্ণ গ্রন্থ আর আগে হয়নি।

“এ মন্দিরটা এতদিনের, ওটা অমুক রাজা অমুক সনে অমুক যুদ্ধের পর ভেঙেছিলেন বা স্থাপন করেছিলেন, শুধু এইসব জানলেই মন্দিরের সব কথা জানা হলনা—মন্দিরের কথা কোনোদিন সম্পূর্ণ হবে না, যতদিন না রীতিমত সন্ধান করে কারা গড়লেন তাঁদের একটা উদ্দেশ্য পাবার চেষ্টা করি ।”

                                                                                                                                                    — অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর

এই উক্তি থেকেই বোঝা যায়, খাজুরাহো মন্দিরের রহস্য এবং শিল্পের গভীরতা শুধু যুগ, রাজা বা যুদ্ধের ইতিহাসেই সীমাবদ্ধ নয়। মন্দিরগুলোর নির্মাণের পেছনে যে উদ্দেশ্য, দর্শন এবং মানব জীবনের গভীর অভিব্যক্তি নিহিত আছে—সেই দিক অনুসন্ধানই এই বইয়ের মূল উদ্দেশ্য।

বইয়ের মূল বিষয়বস্তু:

• স্থাপত্য ও কারুকার্যের বিস্ময়

খাজুরাহোর মন্দিরগুলো কেবল প্রাচীন নির্মাণশৈলীর উৎকৃষ্ট নিদর্শন নয়, বরং ভাস্কর্য ও স্থাপত্যের এক অনন্য সংমিশ্রণ। গর্ভগৃহ থেকে শুরু করে মহামণ্ডপ, এবং মন্দিরের প্রতিটি ভাস্কর্যে জীবনের নানা দিক ফুটে ওঠে।

• মূর্তিকলার ভাব ও রস

এই বইয়ে খাজুরাহোর প্রায় এক হাজার মূর্তির মধ্য থেকে নির্বাচিত কারুকার্য ও মূর্তির মাধ্যমে শিল্পের মাহাত্ম্য, কামকৌমুদ্রিক ভাব এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

• সামাজিক ও ধর্মীয় প্রেক্ষাপট

হিন্দু ও জৈন ধর্মীয় মন্দিরসমূহের সমন্বয়, রাজতান্ত্রিক স্বপ্ন ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের সম্পৃক্ততা এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের বর্ণনা।

• আধুনিক গবেষণার ফল

বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান ও আধুনিক গবেষণার আলোকে বাংলা ভাষায় এই তথ্যগুলো সংকলন করা হয়েছে, যা পাঠককে ভ্রমণের আনন্দের সঙ্গে একাডেমিক তথ্যের সমৃদ্ধি দেয়।

কেন এই বইটি পড়বেন ?

• বাংলায় প্রথম: খাজুরাহোর স্থাপত্য ও মূর্তিকলার বিস্তারিত বর্ণনা সহজ ভাষায় প্রথমবারের মতো বাংলা পাঠকের জন্য উপস্থাপন।
• গভীর ও তথ্যবহুল: শুধু পর্যটন তথ্য নয়, মন্দিরের শিল্প ও ইতিহাসের গভীরতা, মূর্তির অর্থ এবং নির্মাণকর্মের উদ্দেশ্য সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা।
• শিল্প ও ইতিহাসের মেলবন্ধন: প্রত্নতত্ত্ব, ইতিহাস ও সংস্কৃতির একসাথে মিলন, যা খাজুরাহোকে বিশ্বমানের শিল্পতীর্থে পরিণত করেছে।

“খাজুরাহো ” বইটি বাংলা পাঠকদের জন্য এক অনন্য উপহার, যা কেবল একটি ভ্রমণবর্ণনা নয়, বরং ইতিহাস, শিল্প, দর্শন ও সংস্কৃতির একটি সুনিপুণ গবেষণা। প্রাচীন স্থাপত্যশৈলী এবং মূর্তিকলার শিল্পরস উপভোগ করতে যারা আগ্রহী, তাদের জন্য এটি এক অপরিহার্য গ্রন্থ।