উজ্জ্বল আলো, ঝলমলে সাজপোশাক, ক্যামেরার ফ্ল্যাশ আর করতালির মুহূর্তে একজন নায়িকার জীবনে লুকিয়ে থাকে কত অজানা রাত, কত সংগ্রাম, কত অস্বস্তিকর আপস। উপন্যাস “কুহেলিকায় রাত্রিযাপন” সেই আলো ও অন্ধকারের অন্তর্লীন দ্বৈততাকে তুলে ধরে এক প্রথিতযশা অভিনেত্রীর জীবনের গল্পের পরতে পরতে।

নায়িকা কুহেলী বর্মন—টলিউডের উজ্জ্বলতম নামগুলির একটির হঠাৎ মৃত্যু যখন শহরের অলিগলিতে চাঞ্চল্য ছড়ায়, তখন গল্প ঘুরে যায় কয়েক বছর পিছনে। এক কিশোরী কুহু, যার শৈশব কেটেছে মফস্বলের এক দরিদ্র ঘরে, যাকে জীবনের কঠিন বাস্তবতা সময়ের আগেই বড় করে তুলেছে, সেই কুহুই কিভাবে হয়ে উঠল চলচ্চিত্রের কুহেলী বর্মন? কী এমন ঘটেছিল যে তার স্বপ্নের ভিত একদিন গুঁড়িয়ে গিয়ে তাকে ঠেলে দিয়েছিল অপ্রতিরোধ্য এক যুদ্ধে?

এই উপন্যাস কেবল একজন অভিনেত্রীর উত্থান ও পতনের কাহিনি নয়, বরং চলচ্চিত্র জগতের মুখোশপরা বাস্তবতা, সুযোগের পেছনে লুকিয়ে থাকা অভিসন্ধি, এক নারীর অদম্য লড়াই, সাফল্যের উজ্জ্বল মুখোশের পেছনে অন্ধকার গলিপথের ছায়াচিত্র।

এই জগতে জায়গা করে নেওয়া সহজ নয়, টিকে থাকা তো আরও কঠিন। কুহেলীর মতো প্রতিটি নারীর জন্য—যাকে প্রতিনিয়ত নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে হয়, নিজের শরীর, আবেগ, স্বপ্নকে নানাভাবে বাজি রাখতে হয়—সেই সংগ্রামের দলিল হয়ে ওঠে “কুহেলিকায় রাত্রিযাপন”। এই উপন্যাসে রয়েছে নারীজীবনের ভাঙাগড়া, উত্থানপতন, যন্ত্রণা আর জেদের শ্বাসরুদ্ধ রূপায়ণ।

একজন নারীর মুখে উচ্চারিত সেই অটল প্রতিজ্ঞা—“আমিই থাকব নায়িকা”—এই উপন্যাসের কেন্দ্রবিন্দু, এবং পাঠক তার প্রতিটি পৃষ্ঠায় খুঁজে পাবেন সাহস, দহন, ভালোবাসা ও একটি হার না মানা আত্মার কাহিনি।