স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলা সাহিত্যে প্রফুল্ল রায় এক অনন্য কথাশিল্পী। তাঁর সৃষ্টিশক্তির ছোঁয়ায় যেটাই এসেছে, সেটিই হয়ে উঠেছে নতুন বিস্ময়ের জন্মস্থান। মন্বন্তর, দাঙ্গা, দেশভাগ, উত্তর-পূর্ব ভারতের জনজাতির জীবন, সেলুলার জেলের অন্তরালের ইতিহাস, আন্দামানের ঘন জঙ্গল উজাড় করে পূর্ববঙ্গের উদ্বাস্তু পুনর্বাসন, বিহারের পিছিয়ে-পড়া শ্রেণি কিংবা কোঙ্কন উপকূলের জেলে সমাজ—সবই উঠে এসেছে তাঁর সাহিত্যিক কলমে। তাঁর উপন্যাস ও গল্পগুলো পড়লে যেন ভারতের জনজীবনের নাড়ির স্পন্দন অনুভব করা যায়।

এই প্রজ্ঞাবান কথাশিল্পী বহু বছর আগে যখন ‘চরিত্র’ নামক একটি থ্রিলার লেখেন, তখন সাহিত্যমহলে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়। বহুদিন পর তিনি নিয়ে এলেন তাঁর দ্বিতীয়, সম্ভবত শেষ থ্রিলার—‘আঘাত’। আটশো পৃষ্ঠার এই বিশাল উপন্যাস এক নিঃশ্বাসে পড়ার মতো। শুরু করলে শেষ না করে বইটি নামিয়ে রাখা প্রায় অসম্ভব।

‘চরিত্র’ দিয়ে পাঠকদের হৃদয় জয় করেছিলেন প্রফুল্ল রায়। এবার ‘আঘাত’-এর মাধ্যমে তিনি ফিরলেন আরও রোমাঞ্চকর এক অভিযানে। হত্যা, প্রতিশোধ, গ্যাং-ওয়ার, অপহরণ, কোটি টাকার মুক্তিপণ, অবৈধ অস্ত্রের চোরাচালান ও বন্দুকযুদ্ধ—সব মিলে ‘আঘাত’ এক শ্বাসরুদ্ধকর থ্রিলার। প্রতিটি পাতায় আছে উত্তেজনা আর রহস্যের ছোঁয়া। ইংরেজিতে যেমন বলা হয়—“a page-turner”—এই উপন্যাসও তেমনি, যার একবার শুরু হলে শেষ না করে থামা যায় না।