ভারতবর্ষের আত্মার ইতিহাসকে স্পর্শ করতে চাইলে ফিরে তাকাতে হয় সেই প্রাচীন যুগের দিকে, যখন গাঙ্গেয় উপত্যকার অরণ্যে বসবাস করতেন জ্ঞানতপস্বী ঋষি-মুনিরা। তাঁদের ত্যাগ ও সংযম ছিল শুধু ধর্মাচরণের অনুশাসন নয়, ছিল মানবসমাজের জন্য এক নীরব অনুপ্রেরণা। সেই ধারার অবক্ষয় হয়েছে, কিন্তু তা দ্রুত নয়, বরং সময়ের দীর্ঘ ছায়ায়। আর এই ধারা নতুন প্রাণ পেয়েছে বাংলার নবজাগরণে—যেখানে চিন্তা, কর্ম ও আত্মবোধের এক নতুন যুগের সূচনা ঘটেছে।

এই গ্রন্থ সেই নবজাগরণের অন্তঃস্রোতের কথাই বলে। স্বামী বিবেকানন্দের বজ্রনিনাদে যে ঘুমন্ত জাতি সচেতন হল, তার পেছনে ছিল শ্রীরামকৃষ্ণের নিগূঢ় আধ্যাত্মিক বোধ, সারদা মায়ের নিরব শক্তি আর ভারতমাতার সন্তানের মতো নিবেদিত মার্গারেট নোবেলের অন্তরস্নান। শুধু ঐতিহাসিক চরিত্র নয়, এই সংকলনে উঠে এসেছে কিছু অপ্রচলিত অথচ গভীরভাবে প্রাসঙ্গিক জীবনের অনুরণন। সেই সব মানুষ, যাঁরা নিজের নাম নয়, কর্ম দিয়ে ইতিহাসকে নির্মাণ করেছেন, আলো ছড়িয়েছেন নিভৃত জীবনপথে।

এই গ্রন্থ শুধু জীবনী নয়, এক আত্মিক যাত্রা। যাঁরা ইতিহাসকে পড়েন হৃদয়ে, যাঁরা খোঁজেন আদর্শ, ত্যাগ ও সাহসের বাস্তব ছায়াপথ—তাঁদের কাছে এই রচনাসংকলন হয়ে উঠবে অনিবার্য এক পাঠভ্রমণ। এক নবতর মসিলিপিতে লেখা আত্মত্যাগ ও আলোর ইতিহাস।