কালজয়ী বাংলা কল্পবিজ্ঞান — বাংলা ভাষায় কল্পবিজ্ঞানের শিকড় সন্ধানের এক দুর্লভ সংকলন।

বাংলা কল্পবিজ্ঞানের কথা উঠলেই অনেকের মনে ভেসে ওঠে প্রফেসর শঙ্কু কিংবা প্রেমেন্দ্র মিত্রের গল্প। কেউ কেউ আচার্য জগদীশচন্দ্র বোসের 'নিরুদ্দেশের কাহিনী' পর্যন্ত পৌঁছন, যা অনেকের মতে বাংলার প্রথম কল্পবিজ্ঞান। কিন্তু এই ধারার সূচনা আরও অনেক আগেই ঘটেছিল। প্রায় ১৯০ বছর আগে, হিন্দু কলেজের ছাত্র কৈলাসচন্দ্র দত্তের লেখা 'A Journal of Forty Eight Hours of the Year 1945' কল্পবিজ্ঞানচর্চার সেই আদিম পর্বের সাক্ষ্য বহন করে। যদিও 'কল্পবিজ্ঞান' শব্দটির চল শুরু অদ্রীশ বর্ধনের হাতে ১৯৭০-এর পরে, তার বহু আগে থেকেই বাংলা সাহিত্যে ভবিষ্যৎ, প্রযুক্তি ও সমাজ নিয়ে পরীক্ষামূলক চিন্তা শুরু হয়েছিল।

এই সংকলন সেই বিস্মৃতপ্রায় লেখক ও রচনাগুলিকে নতুন আলোয় তুলে ধরার আন্তরিক প্রয়াস। হেমলাল, জগদানন্দ বা বেগম রোকেয়ার মতো লেখকেরা যাঁরা একসময় সাহিত্যের এই ধারাকে গড়ে তোলার প্রাথমিক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, তাঁরা আজও মূলধারার স্বীকৃতি থেকে অনেকটাই দূরে। 'কালজয়ী বাংলা কল্পবিজ্ঞান' তাঁদের অবদানকে তুলে ধরার পাশাপাশি বাংলা সাহিত্যে কল্পবিজ্ঞানের বিকাশের প্রেক্ষাপটও পাঠকের সামনে উন্মোচন করে।

বাংলা সাহিত্য যেমন বহুবিচিত্র, তেমনই কল্পবিজ্ঞানও তার এক গুরুত্বপূর্ণ শাখা। এই বই সেই শাখার শিকড় সন্ধানের সেতুবন্ধন হয়ে উঠতে চায়, পাঠককে ফিরে যেতে আহ্বান জানায় সাহিত্যের সেই উৎসসময়ে, যেখানে ভবিষ্যতের কল্পনা এবং বিজ্ঞান একসাথে পথ চলা শুরু করেছিল।