১৮শ শতকের বাংলার ইতিহাসে রাণী ভবাণী এক উজ্জ্বল কিংবদন্তি — ক্ষমতা, করুণা ও সমাজসেবার এক বিরল প্রতিমূর্তি। 

রামকান্ত মৈত্রের মৃত্যুর পর রাণী ভবাণী নিজ হাতে সামলান নাতোর রাজ্য, যা বিস্তৃত ছিল উত্তরবঙ্গ থেকে রাজশাহী, বর্ধমান, বীরভূম পর্যন্ত। নারী হয়েও তিনি প্রশাসনের প্রতিটি দিক সামলেছেন দক্ষভাবে। তাঁর সময়ে রাজস্ব আদায় ও কৃষক-সহযোগিতায় যে ভারসাম্য বজায় ছিল, তা তাঁকে উপাধি দিয়েছিল “অর্ধবঙ্গেশ্বরী”। তবে এই বই শুধু তাঁর শাসক জীবনের গল্প নয়। এখানে বিবৃত হয়েছে তাঁর বিশাল দানশীলতা ও সমাজকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড—মন্দির, রাস্তা, ধর্মশালা নির্মাণ; শিক্ষা ও সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতা; এবং বিধবা নারীদের পাশে দাঁড়ানোর সাহসী পদক্ষেপ। বেনারসের দুর্গাকুণ্ড মন্দির, মুর্শিদাবাদের বরানগরের টেরাকোটা মন্দির—সবই তাঁর ঐতিহ্যের সাক্ষ্য।

নারী হিসেবে যে প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাঁকে, সে লড়াইয়ের অভিজ্ঞতাও উঠে এসেছে এই বইয়ের পাতায়। শুধু রাজনীতি নয়, রাণী ভবাণীর ব্যক্তিত্ব, তাঁর নীতিনিষ্ঠ জীবন এবং শুদ্ধচেতা দর্শন এই জীবনীকে করে তুলেছে এক মনোগ্রাহী পাঠ।

অক্ষয় কুমার মিত্র রচিত এই গ্রন্থটি পাঠককে নিয়ে যায় রাণী ভবাণীর জীবনপথের এক ঐতিহাসিক যাত্রায় — যেখানে উঠে এসেছে তাঁর জমিদারত্ব, শাসনদক্ষতা, মানবিকতা ও এক নারীর সমাজে টিকে থাকার সংগ্রাম। ‘রাণী ভবাণী’ বইটি ইতিহাসপ্রেমী, সমাজচিন্তক এবং নারীশক্তির গৌরব অন্বেষণকারী পাঠকদের জন্য এক অনিবার্য সংযোজন। এটি কেবল একজন নারীর জীবনের আখ্যান নয়, বরং এক গোটা যুগের আয়না।

[প্রকাশকের মতে কলকাতা বইমেলা ২০২৫তে এই বইটি প্রায় ৩০০০ কপি বিক্রিত হয়েছিল]