দাঙ্গার ছায়ায়, স্মৃতির আলোয়—এই বইতে দেখা মেলে এক অন্য ‘বাপু’র

‘বাপুর ঘড়ি চুরি’—শিরোনাম যেন এক তাৎপর্যময় ইঙ্গিত। কিন্তু শুধু ঘড়ি নয়, বইটি তুলে ধরে এক সময়, এক শহর, এক মানুষের অজস্র পরিচয়ের জটিল ছবি। হায়দরি মঞ্জিলের ইঁট-কাঠের নিঃসঙ্গতা থেকে শুরু করে দাঙ্গা-বিধ্বস্ত কলকাতার রক্তাক্ত প্রেক্ষাপট, সব মিলিয়ে যেন ইতিহাসের এক অনুপম কোলাজ।

এই বইতে দেখা যায় কলকাতা ময়দানের আশাবাদী ভূমিকা, যেখানে ঘৃণার বদলে ভালোবাসার স্পন্দন ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় মগ্ন ছিল শহরের খেলাধুলার জগত। আবার দেখা যায় লন্ডনের পথে এক তরুণ আইনজীবীর আত্মজিজ্ঞাসা, জন রাসকিনের ‘Unto This Last’ বই পড়ে যার দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে গেল চিরতরে।

বাঙালির গর্ব ‘সুলেখা কালি’ হোক বা জে বি ও সুচেতা কৃপালনীর প্রণয় ও পরিণয়কে ঘিরে বাপুর ব্যর্থ হস্তক্ষেপ, কিংবা সেই প্রিয় ‘নির্মলা’র স্মৃতি—সবই এখানে গল্প হয়ে ধরা দিয়েছে অতীতের গভীর পটে।

কিন্তু সব কিছুর কেন্দ্রে রয়েছেন তিনি, যাঁকে আমরা বাপু বলে চিনি। তাঁর মমতাময় মুখ, তাঁর সংকল্প, তাঁর আদর্শ—সব মিলিয়ে এই বই যেন আমাদের আবার ফিরিয়ে নিয়ে যায় এক স্মৃতিমগ্ন, ভাবনাসমৃদ্ধ সময়ে।

পাঠকের কাছে বইটি শুধু একটি জীবনী নয়, বরং ইতিহাস আর মানবিকতার এক অনন্য দলিল।