কলকাতা নিয়ে আবার একটা নতুন বই! সেই নতুন বোতলে পুরোনো মদ, সেই আদিখ্যেতা!

এসব আপনি ভাবতেই পারেন। আমরা বলব, আপনি ঠিক, আজকের এই ব্লগ, ভ্লগ আর পডকাস্টের যুগে নতুন তথ্য পরিবেশন করা বেশ কঠিন, বিশেষ করে সেটা যদি একটা শহরের ব্যাপারে হয়। তবুও আমরা চেষ্টা করেছি এই শহরের এমন কিছু দ্রষ্টব্য আপনার সামনে তুলে ধরতে, যেগুলি হয়তো আপনি মিস করে গেছেন আপনার দৈনন্দিন চলাফেরার পথে। বহুচর্চিত বিষয়গুলি ইচ্ছে করেই যতটা সম্ভব এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে আমাদের চেষ্টা থেকেছে স্বল্প-আলোচিত বিষয়গুলির প্রতি বেশি আলোকপাত করা। কখনও সেটি একটি সিংহের মাথা হতে পারে আবার কখনও কোনও হারিয়ে যাওয়া রেস্তোরাঁর নামফলক; কখনও বৌদ্ধ দেবদেবীর মূর্তি উৎকীর্ণ একটি তোরণ আবার কখনও আদালত অঞ্চলের একটি অবহেলিত মূর্তি। 

• লেখা: অভিনব রায়
• ছবি: বিকাশ কল্প
• প্রচ্ছদ: রৌম্যজিৎ হাজরা

লেখকের নিজের কথায়, "... বুড়ি কলকাতার তন্বী রূপের প্রেমে পড়েছি কবে‚ আজ আর তা মনে পড়ে না‚ শুধু জানি এই শহর এক স্বভাব জাদুকরী। কারণ‚ এই তিনশো বছরের শহরের অলি গলি রাস্তাঘাট দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে কখন যেন চোখের সামনে ঝলসে ওঠে এক ক্যালাইডোস্কোপ‚ যেখানে একদিকে মাথা তোলে নন্দরামের মন্দির‚আর একদিকে বাংলার গ্যারিক‚ ওই ভেসে আসে নবাব ওয়াজেদের লখনৌ বিরিয়ানির খুশবু‚ আর তার সাথেই চিৎপুরের আতরওয়ালাদের আতরের অলৌকিক সুগন্ধ। উত্তরের এঁদোগলিতে শুনতে পাই গান বাঁধছেন সলিল চৌধুরী‚ আবার দক্ষিণে সারারাত দরজা খুলে বসে থাকে এক ওষুধ-দোকান‚ নাম‚ বাথগেট। ময়দানের সন্ধ্যায় গোলের চিৎকার মিলিয়ে যেতে যেতে ছলকে ওঠে চিকেন স্ট্যু আর মধ্যরাতের পার্ক স্ট্রিটের মায়া-সরণিতে জেগে ওঠেন পাম ক্রেইন আর উষা আইয়ার। আমরা হাঁটতে থাকি‚ আমাদের সঙ্গে হাঁটেন রবীন্দ্রনাথ‚ জীবনানন্দ‚ শক্তি, সুনীল‚ সত্যজিৎ। দক্ষিণের দেব বর্মনদের গানবাড়ির সঙ্গে উত্তরে পাথুরেঘাটার জ্ঞান গোঁসাই মিয়াঁ-কি-মলহারে সুর তোলেন‚ আমরা নিজেদের হারিয়ে ফেলি এই শহরের অলি গলি পাকস্থলিতে‚ যে শহরের নাম ছিল ক্যালকাটা। ..."

যা-ই হোক, আসুন সবাই মিলে আরও একবার এই পুরোনো একঘেয়ে শহরটির অলি-গলি-পাকস্থলী থেকে খুঁজে নিই কিছু মণিমুক্তো, যা আমাদের পুরোনো ফুসফুসে ভরে দেবে কিছুটা সবুজ বাতাস। কলকাতা নিয়ে একটি অন্য রকম বই — ক্যালকাটা: অলি-গলি-পাকস্থলী ।