Writer : Abhijit Sen
Edited By : NA
Compiled By : NA
Translated By : NA
Publishers : J N Chakraborty & Co [with Swastik Prakashan]
- Shipping Time : 10 Days
- Policy : Return/Cancellation?
You can return physically damaged products or wrong items delivered within 24 hours with photo/video proof.
Contact Customer Support for return initiation and receive return authorization via email. Securely package for return.
Refunds for eligible returns are processed within 7-10 business days via Bank Transfer.
Order cancellation allowed within 24 hours of placing it. Standard policy not applicable for undamaged/wrong product cases. Detailed info. - Genre : Literature>Novels & Novellas
- Publication Year : 2024
- ISBN No : 978-93-80411-12-5
- Binding : Paste Board (Hard) with Gel Jacket
- Pages : 272
- Weight : 499 gms
- Height x Width x Depth : 8.5x5.5x0.5 Inch
If so, it will be notified
About the Book
রহু চণ্ডালের হাড় — একটি প্রান্তিক জীবনযাত্রার মহাকাব্য
অভিজিৎ সেনের প্রথম উপন্যাস ‘রহু চণ্ডালের হাড়’ প্রান্তিক মানুষের ইতিহাস, সংগ্রাম, নির্বাসন ও পরিচয়ের অনুসন্ধানের এক অসামান্য দলিল। বাজিকর — এক যাযাবর, জাতিহীন, ধর্মহীন, বহুবছর ধরে শোষিত সম্প্রদায়ের অতীত-বর্তমানের গল্পকে লেখক রূপক-পুরাণ, ইতিহাস ও বাস্তবতার বুননে অসাধারণভাবে উপস্থাপন করেছেন।
বাজিকরদের উৎসকথা: রহু চণ্ডালের মিথ
উপন্যাসের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ‘রহু’—বাজিকরদের কিংবদন্তি দলপতি। তিনি ঈশ্বর নন, আবার সাধারণ মানুষও নন; বরং তাদের অস্তিত্ব ও যাত্রার প্রতীক। নিজ ভূমিতে স্বাধীনভাবে থাকা রহু বহিরাগতদের আগ্রাসনে নিহত হন; তার দেহের হাড়কে আশ্রয় করে বাজিকরদের শুরু হয় এক দীর্ঘ, অনন্ত যাত্রা। এই ‘রহুর হাড়’ই হয়ে ওঠে তাদের পরিচয়, স্মৃতি, ও বেঁচে থাকার শক্তি।
দেড়শো বছরের যাযাবর ইতিহাস
শারিবার দিদিমা লুবিনি থেকে শুরু করে পীতেম, পরতাপ, জামির—কয়েক প্রজন্মের কাহিনি মিলেমিশে তৈরি হয়েছে প্রায় দেড়শো বছরের একটি ধারাবাহিক উপাখ্যান। বাজিকরদের লক্ষ্য একটাই—থিতু হওয়া। কিন্তু সমাজ, জমিদারি, দারোগা, মহাজন এবং জাত-ধর্মভিত্তিক বঞ্চনার প্রাচীর তাদের বারবার ছুড়ে ফেলে পথের ধুলোয়।
সমাজের সঙ্গে লড়াই
বাজিকরদের নেই জাত, নেই ধর্ম। তারা হিন্দু নয়, মুসলমান নয় — এই অধরা পরিচয়ই তাদের সর্বক্ষণ শোষণ ও সন্দেহের মুখোমুখি দাঁড় করায়। গ্রাম থেকে গ্রাম, নদী থেকে শহরতলি—যেখানে ডেরা ফেলে, সেখানেই শুরু হয় নতুন অপমানের ইতিহাস:
- চুরি-ডাকাতির মিথ্যা অভিযোগ
- জমিদারের শোষণ
- দারোগার তদবির
- মহাজনের সুদের ফাঁদ
- মেয়েদের উপর নির্যাতন
- বারবার উচ্ছেদ
তবু তারা লড়ে গেছে — গাছ কেটে, জমি ইজারা নিয়ে, চাষ করে, পাথর খালাস করে স্থিতিধারণের প্রত্যাশায়।
ভালবাসা, ক্ষতি, প্রতিশোধ — মানুষের গল্প
জীবনের নিত্যকার অস্থিরতার মধ্যেও জন্মেছে প্রেম, জন্মেছে ঘৃণা, প্রতিশোধ ও মৃত্যুর গল্প। পেমা, সালমা, রূপা, ওমর, মালতী—প্রতিটি চরিত্রের জীবন ও যন্ত্রণা এই উপন্যাসকে করে তোলে আরও বাস্তব, আর্ত, মানুষের গল্পে ভরপুর।
ইতিহাসের পটভূমি
উপন্যাসের সময়কাল স্বাধীনতার পূর্ব ও পরবর্তী সময় হলেও এটি আসলে প্রান্তিক মানুষের চিরকালের ইতিহাস। বাজিকরদের পাশাপাশি সাঁওতাল, দরিদ্র কৃষক, শ্রমিকদের জীবনসংগ্রামও উঠে এসেছে অত্যন্ত জীবন্তভাবে। উপন্যাসে দেখা যায় ব্রিটিশ শাসন, স্থানীয় মহাজন ও জমিদারি অত্যাচারের ক্রমাগত চিত্র — এক অন্ধকার ইতিহাস, যা মূলধারার সাহিত্যে খুব কমই দেখা যায়।
বাংলা সাহিত্যধারায় একটি উজ্জ্বল সংযোজন
‘রহু চণ্ডালের হাড়’ একই সঙ্গে মিথ, লোকঐতিহ্য, সমাজতত্ত্ব ও ইতিহাসের সমন্বয়ে নির্মিত এক অনন্য আখ্যান। ‘হাঁসুলী বাঁকের উপকথা’, ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’-এর মতো প্রান্তিক মানুষের উপন্যাসের ধারায় এটি নিঃসন্দেহে এক উজ্জ্বল নাম।
প্রথম উপন্যাসেই অভিজিৎ সেন দেখিয়েছেন অসাধারণ দক্ষতা—
- ভাষার শক্তি
- চরিত্রের গভীরতা
- ইতিহাস ও লোকগাথার মেলবন্ধন
- প্রান্তিক জীবনের নির্মম বাস্তবতা
এই বইয়ের রেশ পাঠকের মনে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান। ১৯৯২ সালে অভিজিৎ সেনকে এই উপন্যাসের জন্য বঙ্কিম পুরষ্কারে ভূষিত করা হয়। যখনই কোনো বাজিকর, সাপুড়ে বা বেদে দেখা যায়, মনে পড়ে যায় পীতেম, লুবিনি, পরতাপ, সালমা, জামির কিংবা শারিবার কথা। সংক্ষেপে, ‘রহু চণ্ডালের হাড়’ প্রান্তিক মানুষের বেদনা, সংগ্রাম ও পরিচয়ের মহাকাব্যিক উপাখ্যান — বাংলা সাহিত্যের অনন্য সম্পদ।
