উপন্যাসটির বিষয়বস্তুতে রয়েছে পূর্ববঙ্গ থেকে আসা ভিটাচ্যুত অসংখ্য উদ্বাস্তু, যাদের তৎকালীন সরকার আন্দামানে নিয়ে গিয়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। সেই সাথে প্রতিটি পরিবারকে দিয়েছিলেন বসত বাড়ির পর্যাপ্ত জমি ও চাষের জমি বাবদ ১৫ থেকে ২০ একরের মতো। দিয়েছিলেন চাষের হাল-বলদ, বীজ, গাভী এইসব প্রয়োজনীয় জিনিস। উপন্যাসের প্রায় অর্ধাংশ জুড়ে রয়েছে উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসন পাওয়া এবং তাদের ঘর-গেরস্থালীর কথা। 

কিন্তু একদিন এই কদমতলার বেশ কিছু কচি-কাঁচার দল গিয়েছিল গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে মহুয়ার ফুল কুড়োতে। ঘটনাচক্রে সেখান থেকে কিছু জারোয়া এসে ঐ কচি-কাঁচাদের মধ্য থেকে একজন ছেলে এবং একজন মেয়েকে তুলে নিয়ে যায়। আর বাকীরা পালিয়ে আসে তাদের গ্রাম কদমতলায়। আর এখান থেকেই শুরু হয় জারোয়াদের কথা। কারণ সভ্য সমাজের ছেলে-মেয়েদুটো বেড়ে ওঠে জারোয়া সমাজে। 

এই উপন্যাসটিতে জারোয়াদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা, তাদের কুটির, খাদ্যাভ্যাস, রন্ধন প্রণালী, খেলাধুলো বা অবসর বিনোদন, রূপচর্চা, হস্তশিল্প, বিবাহ প্রথা, সংস্কার, সৎকার পদ্ধতি, সামাজিক অনুশাসন এবং সেই সাথে ওদের মুখের ভাষা যতটা সম্ভব পারা যায় দেওয়া হয়েছে। নেগ্রিটোর আদিম জারোয়া ভাষার কোন পান্ডুলিপি নেই। সম্পূর্ণ আঞ্চলিক Institute of Indian Language কে দিয়ে ১৯৯৮ সালে জারোয়াদের ভাষা সংগ্রহের কাজ করানো হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে কেন্দ্রীয় সরকার বইটি প্রকাশ করার পরে সাথে সাথে বইটি সংরক্্ষিত ঘোষনা করে।