Welcome to Dorlink
Selected Books
×
Samagra Byakaran Koumudi [for Class VII to XII]
  • Shipping Time : 7 Days
  • Policy : Return/Cancellation?

    You can return physically damaged products or wrong items delivered within 24 hours with photo/video proof.
    Contact Customer Support for return initiation and receive return authorization via email. Securely package for return.

    Refunds for eligible returns are processed within 7-10 business days via Bank Transfer.
    Order cancellation allowed within 24 hours of placing it. Standard policy not applicable for undamaged/wrong product cases. Detailed info.

  • Genre : Educational>Language & Grammar
  • Publication Year : 2024
  • ISBN No : NA
  • Binding : Paper Back
  • Pages : 816
  • Weight : 550 gms
  • Height x Width x Depth : 07x05x02 Inch
MRP : ₹150.00/- Discount : 10% Off
Your Price : ₹135.00/-
MRP is subject to change as per edition/impression by the publisher.
If so, it will be notified

About the Book

এই “সমগ্র ব্যাকরণ কৌমুদী” বাংলা ব্যাকরণচর্চার ইতিহাসে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ, যার রচয়িতা মহামান্য ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। উনিশ শতকের এই মহান শিক্ষাবিদ কেবল সমাজসংস্কারেই নয়, ভাষাবিজ্ঞানেও বিশাল অবদান রেখে গেছেন। বাংলা ভাষাকে যৌক্তিক, সুশৃঙ্খল ও শিক্ষাবান্ধব করার যে প্রয়াস তিনি গ্রহণ করেছিলেন, তার অন্যতম ফল হলো “ব্যাকরণ-কৌমুদী”, যা পরবর্তীকালে বিভিন্ন খণ্ডে ও পুনঃসংকলনে “সমগ্র ব্যাকরণ কৌমুদী” হিসেবে পরিচিত হয়। বহু সংস্করণে এটি প্রকাশিত হলেও মূলভাব একই—ব্যাকরণকে এমনভাবে বিন্যস্ত করা, যা শিক্ষার্থী থেকে গবেষক পর্যন্ত সবার জন্য পথনির্দেশক হয়ে ওঠে।

গ্রন্থটির শুরুতে বিদ্যাসাগর ধ্বনিবিজ্ঞান ও বর্ণবিন্যাস ব্যাখ্যা করেন। বাংলা ও সংস্কৃত উভয় ভাষার স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ, ধ্বনির শ্রেণিবিন্যাস ও গঠনপ্রক্রিয়া স্পষ্ট করে তুলে ধরা হয়েছে। এরপর তিনি ভাষার অন্যতম ভিত্তি ‘সন্ধি’-র নিয়ম ব্যাখ্যা করেন, যেখানে স্বর-সন্ধি, ব্যঞ্জন-সন্ধি ইত্যাদির বাস্তব প্রয়োগ উদাহরণসহ বোঝানো হয়েছে। ব্যাকরণ কৌমুদীর একটি বিশেষত্ব হলো শব্দ ও বাক্যগঠনকে কারক, লিঙ্গ, বচন ও পদপ্রকরণ—এই দিক দিয়ে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা। বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, অব্যয়, ক্রিয়া—এ সবকিছুরই ব্যাকরণগত গঠন, ব্যবহার ও ব্যতিক্রম তুলে ধরা হয়েছে, যা শেখাকে সহজ ও সুসংহত করে।

ক্রিয়াপদের প্রসঙ্গে বিদ্যাসাগর বিশেষ যত্ন নিয়েছেন। ক্রিয়ার কাল, পুরুষ, সংখ্যা, ধাতু, বিকৃতি এবং প্রয়োগের ব্যাকরণীয় রূপ তিনি অত্যন্ত পরিচ্ছন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। অন্যান্য ব্যাকরণগ্রন্থের তুলনায় “ব্যাকরণ কৌমুদী”-র স্বাতন্ত্র্য হলো তার উদাহরণ-নির্ভর ব্যাখ্যা ও যুক্তিনিষ্ঠ উপস্থাপন, যা পাঠককে নিয়ম মুখস্থ করার বদলে ভাষার ভেতরের যুক্তি উপলব্ধি করতে সাহায্য করে। গ্রন্থটিতে প্রচুর পারিভাষিক শব্দ ব্যবহৃত হলেও তা ব্যাকরণের শাস্ত্রীয় ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে এবং পাঠককে ভাষাবিজ্ঞানীয় ভাবনার দিকে পরিচালিত করে।

শিক্ষাগত দিক থেকে এই গ্রন্থের গুরুত্ব অপরিসীম। একদিকে এটি বাংলা ব্যাকরণ অধ্যয়নের ভিত্তি স্থাপন করে, অন্যদিকে সংস্কৃত ব্যাকরণীয় ধারা ও প্রাচীন ভাষাবৈজ্ঞানিক জ্ঞানকে সংরক্ষণ করে। বিদ্যাসাগর ব্যাকরণকে নিছক নিয়মের তালিকা না বানিয়ে, একে যুক্তিসম্পন্ন বিদ্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠা দেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল সাধারণ মানুষকে ভাষার কাঠামো বুঝিয়ে দেওয়া এবং শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও সুসংহত করা। তাই “সমগ্র ব্যাকরণ কৌমুদী” কেবল শিক্ষার্থীদের বই নয়—এটি বাংলা ভাষার বিকাশের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী দলিল।

যদিও কিছু পাঠকের মতে এর ভাষা ও উপস্থাপন আজকের শিক্ষার্থীর জন্য কিছুটা কঠিন বা প্রাচীন মনে হতে পারে, তবুও এর গভীরতা, পরিপাটি বিশ্লেষণ ও ব্যাকরণশাস্ত্রীয় ঐতিহ্য একে আজও অপরিহার্য করে রেখেছে। ডিজিটাল আর্কাইভ ও বিভিন্ন পুনঃসংস্করণের মাধ্যমে এটি এখনও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় এবং গবেষক, শিক্ষক, ছাত্র—সবারই কাছে এটি এক নির্ভরযোগ্য উৎস।

সব মিলিয়ে, “সমগ্র ব্যাকরণ কৌমুদী” শুধু একটি ব্যাকরণ গ্রন্থ নয়; বাংলা ভাষার শৃঙ্খলা, বিশুদ্ধতা ও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি স্থাপনের ক্ষেত্রে এটি এক ঐতিহাসিক সোপান। বিদ্যাসাগরের ভাষাবোধ, বিশ্লেষণী ক্ষমতা ও সমাজমুখী শিক্ষাদর্শ এই গ্রন্থে এমনভাবে সংহত হয়েছে যে এটি বাংলা ব্যাকরণশাস্ত্রকে আরও সুগভীর ও সুপ্রতিষ্ঠিত করে তুলেছে।