“রবীন্দ্রনাথ জানতেন ইন্দিরা দেবীর স্বভাবের মধ্যে একটি সরল স্বচ্ছতা এবং সত্য আকর্ষণ করে নেবার ক্ষমতা আছে। তিনি মনীষী ইন্দিরা দেবীকে সংগীত, সাহিত্য, প্রকৃতি ও জীবনবোধ নিয়ে নিবিড় ভাবনা লিখেছেন পত্রে পত্রে; শুরু ১৮৮৭, শেষ ১৯৪১ সাল। এই পত্র প্রবাহের দুটি পর্বÑ এক ছিন্নপত্রাবলী, দুই চিঠিপত্র। যুবক রবীন্দ্রনাথ শিল্প সাহিত্য বিষয়ে মনের অব্যক্ত ভাব, ভাবনা, আবেগ, অনুভূতি এমনকি হেঁয়ালি অসংকোচে প্রকাশ করেছেন প্রিয় ভ্রাতুষ্পুত্রী ইন্দিরা দেবীকে লেখা পত্রাবলীতে। “শুদ্ধভাবে রবীন্দ্রসংগীত শিক্ষাদান ও চর্চা বিষয়ে পরিণত ইন্দিরা দেবী ছিলেন অত্যন্ত সচেতন। রবীন্দ্রনাথের অমূল্য গানের ভা-ার ভুল বিকৃত শিক্ষায় যেন কোনভাবে ক্ষতি না হয় তার জন্য তিনি নানাভাবে চেষ্টা করেছেন। এই বিষয়টি আলাপচারিতায় গুরুত্ব পেয়েছে। বিশ্বভারতী ১৯১৩ থেকে ১৯৪১ সময়ের মধ্যে ইন্দিরা দেবীকে লেখা রবীন্দ্রনাথের যে ৮৪টি চিঠি সংকলন করেছে তার ভাষা পত্রাবলির মতো কাব্য ও আবেগাক্রান্ত নয়, তবে পরিণত রবীন্দ্রনাথের চিঠিরও মুখ্য বিষয় সংগীত, সাহিত্য ও প্রমথবাবুর সবুজপত্র। “আলাপচারিতার প্রকাশপূর্ব পটভূমি হিসেবে বিবেচিত রবীন্দ্রনাথের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের পূর্ব-মুহূর্ত। ‘রবি’ নামে কল্পিত সাহিত্যপত্রে কাল্পনিক আলাপচারিতাটি গ্রহণের সময় তাই দেখানো হয়েছে জানুয়ারি ১৯৬০ সাল। শ্রদ্ধেয়া রানীচন্দ-এর ‘আলাপচারি রবীন্দ্রনাথ’ নামটি এই অভিনব গবেষণা গ্রন্থের নামকরণে পরক্ষে অনুপ্রেরণা ছিল সেকথা অবশ্য স্বীকার্য।