(Written By Pallab Das, Quoted From Suprokash Facebook Page)

কোভিড নিয়ে কয়দিন গৃহবন্দী। জোর করেই বইঘরে আইসোলেশন। কদিন মাথা তুলতে পারিনি। আজ অনেক সুস্থ, মনের ভেতরটা বড়ো খালি। নদীর মতন। খুলে বসলুম দুর্লভ সূত্রধরের আহাম্মকের খুদকুড়ো। ব্যাস, অমনি মনখানা হয়ে গেল রূপেশ্বরী নদী। অনর্গল কথা চলল লেখকের সঙ্গে, তার সময় তার অনুভূতির সাথে। এ এক অদ্ভুত অনুভূতি। যে পাঠক বইকে ছুঁতে জানে সে বোঝে।
খুদকুড়ো কি উপন্যাস, না, স্মৃতিচারণ? আসলে একটাও না। খুদকুড়ো তরল সময়ের আখ্যান। অনুভূতির আখ্যান। রাঢ় বঙ্গে অনেক গ্রামীণ শহরের সাথেই মিলে যায় জায়গাটির বর্ণনা, অথচ, তার অস্তিত্ব কেবল লেখকের মনে, পাঠকের মনে আর বইয়ের পাতার সুবাসে। এই শহরকে ঘিরে মূলত একের পর এক অনুভূতির মিছিল নামে। ক্ষিদে - এর মতন নিপাট নির্ভেজাল অনুভূতি দ্বিতীয় আছে নাকি? তাই প্রথম অংশে খালি খাদ্যের বর্ণনা। খালি খাদ্যের? তাইকি? সাথে কি একটুও উঠে আসেনি খাদ্যভ্যাস থেকে সামাজিক পরিসর চিনে নেওয়ার আখ্যান? আসেনি ভালোবাসার গল্প?

অনুভূতির পরম বিকাশ স্থল ইস্কুল । এখানে রিপাবলিক। সরস্বতী পুজো থেকে বিশ্বকর্মা, শিক্ষক ছাত্র সম্পর্কের রূপকথা বলে যান সূত্রধর বাবু। স্কুল থেকে আসে পাড়া, প্রেম, প্রণব দার মতন স্বার্থহীন জনদরদী এবং স্বার্থের লড়াই। আসে মুক্তিযুদ্ধ, আসে রেফুজির ঢল, আসে জয় বাংলা, আসে আমীরা এবং চলে যায়। মিছিল নামে লেখকের বুকে। রূপেশ্বরীর কাছে সব বলে ক্ষান্ত হন তিনি। তৈরি হয় এক তরল সময়ের আখ্যান।
পড়তে পড়তে আমি হয়ে যাই শান্ত নদীপট। বুকের ওজন বাড়ে। আমার মধ্যে মিশে যায় 'দুর্লভ' অভিজ্ঞতা। এখানেই এই আখ্যানের স্বার্থকতা। আরও লেখার অপেক্ষায় রইলো আমার টলটলে মন। টুপ শব্দটা বড়ই প্রিয় হয় সময় বিশেষে।