Welcome to Dorlink
Selected Books
×
Carey Saheber Munsi

Edited By : NA

Compiled By : NA

Translated By : NA

Publishers : Mitra O Ghosh Publishers Pvt.Limited

  • Shipping Time : 7 Days
  • Policy : Return/Cancellation?

    You can return physically damaged products or wrong items delivered within 24 hours with photo/video proof.
    Contact Customer Support for return initiation and receive return authorization via email. Securely package for return.

    Refunds for eligible returns are processed within 7-10 business days via Bank Transfer.
    Order cancellation allowed within 24 hours of placing it. Standard policy not applicable for undamaged/wrong product cases. Detailed info.

  • Genre : Literature>Autobiography & Biography
  • Publication Year : 2022
  • ISBN No : 978-8172930134
  • Binding : Normal Jacket with Pasteboard
  • Pages : 339
  • Weight : 520 gms
  • Height x Width x Depth : 8.7x5.5x0.8 Inch
MRP : ₹400.00/- Discount : 15% Off
Your Price : ₹340.00/-
MRP is subject to change as per edition/impression by the publisher.
If so, it will be notified

About the Book

লেখকের বক্তব্য:

বছর পনেরো আগে রামরাম বসুর জীবন নিয়ে কিছু একটা লিখবার ইচ্ছা হয়, তখন ধারণা ছিল না যে তা ঠিক কি আকার ধারণ করবে। তার পরে বিষয়ের মধ্যে প্রবেশ করে বিস্মিত হয়ে গেলাম। রামরাম বসু প্রসঙ্গে উইলিয়াম কেরীকে পেলাম। বুঝলাম যে যে-সব মহাপ্রাণ ইংরেজ এদেশে এসেছেন, উইলিয়াম কেরী তাঁদের অগ্রগণ্য। কেরীর ধর্মজীবন, ধর্মপ্রচারে আগ্রহ, বাংলা গদ্য সৃষ্টিতে নিষ্ঠা ও অধ্যবসায় অভিভূত করে দিল আমাকে। তখন ধীরে ধীরে কেরী ও রামরাম বসুকে অবলম্বন করে কাহিনীটি রূপ গ্রহণ করে উঠল।


এই কাহিনীকে পাঠক ঐতিহাসিক উপন্যাস বলে গ্রহণ করবেন কিনা জানি না, করলে আমার আপত্তির কারণ নেই। ১৭৯৩ থেকে ১৮১৩ সালের ইতিহাস এর কাঠামো। জ্ঞানত কোথাও ইতিহাসের সত্য থেকে বিচ্যুত হই নি। কেবল একটি বিষয়ে কিছু স্বাধীনতা নিয়েছি, দ্বারকানাথ ঠাকুরের বয়স কিছু বাড়িয়ে দিয়েছি! আর কিছুই নয়, রবীন্দ্রনাথের পিতামহকে কাহিনীর মধ্যে আনবার লোভ সম্বরণ করতে পারি নি।


ইতিহাসের সত্য ও ইতিহাসের সম্ভাবনা ঐতিহাসিক উপন্যাসকারের উপাদান। ইতিহাসের সত্য অবিচল, তাকে বিকৃত করা চলে না। ইতিহাসের সম্ভাবনায় কিছু স্বাধীনতা আছে লেখকের। সত্যের অপব্যবহার করি নি, সম্ভাবনার যথাসাধ্য সদ্ব্যবহার করতে চেষ্টা করেছি।


দুই শ্রেণীর নরনারীর চরিত্র আছে উপন্যাসখানায়, ঐতিহাসিক আর ইতিহাসের সম্ভাবনা-সঞ্জাত। কেরী, রামরাম বসু, মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার, টমাস, রামমোহন, রাধাকান্ত দেব প্রভৃতি ঐতিহাসিক চরিত্র। রেশমী, টুশকি, ফুলকি, জন স্মিথ, লিজা, মোতি রায় প্রভৃতি ইতিহাসের সম্ভাবনা-সঞ্জাত অর্থাৎ এসব নরনারী তৎকালে এইরকমটি হত বলে বিশ্বাস। এখানে যেমন কিছু স্বাধীনতা আছে, তেমনি ভুলের সম্ভাবনাও বর্তমান। ভুল না করে স্বাধীনতার সুযোগ গ্রহণে লেখকের ক্ষমতার পরিচয় পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে ক্ষমতা কতটা প্রকাশ পেয়েছে জানি না।………..



প্রমথনাথ বিশীর লেখা কেরী সাহেবের মুন্সী উপন্যাসটি উপনিবেশিক ভারতবর্ষের প্রেক্ষাপটে ইতিহাস ও কল্পনার এক দুর্দান্ত মেলবন্ধন। সময়টা ১৭৯৩ সাল, কলকাতার চাঁদপাল ঘাটে নামছেন ইংরেজ মিশনারি পাদ্রী উইলিয়াম কেরী। খ্রিস্টধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে তিনি নিযুক্ত করেন স্থানীয় পণ্ডিত রামরাম বসুকে—যিনি তাঁর ‘মুন্সী’। এই দুজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এক জটিল সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান, যা শুধুমাত্র ধর্মীয় নয়, ভাষা, সমাজ ও চিন্তাচেতনার স্তরেও গভীরভাবে ছুঁয়ে যায়।

উপন্যাসটি মূলত ঐতিহাসিক কাহিনির ছায়ায় রচিত হলেও কাহিনির কেন্দ্রে উঠে আসে একটি অনৈতিহাসিক, কিন্তু অত্যন্ত প্রভাবশালী নারী চরিত্র—রেশমী। সতীদাহ প্রথা থেকে পালিয়ে কেরীর নৌকায় উঠে পড়া এই তরুণী কেবল একজন ভুক্তভোগী নারী নয়, বরং সমাজ ও ধর্মের বিপরীতে দাঁড়ানো এক মানবিক শক্তির প্রতীক। তাঁর উপস্থিতি পুরো উপন্যাসকে একটি নব্য মাত্রায় নিয়ে যায় — যেখানে নারীর স্বাধীনতা, প্রেম, সাহস, এবং সমাজব্যবস্থার দ্বন্দ্বগুলো প্রবলভাবে প্রতিফলিত হয়।

পাঠক উপন্যাসে পাবেন অদ্ভুত এক টানাপোড়েন — একদিকে পাদ্রী কেরীর ধর্মপ্রচারের আন্তরিকতা, বাংলা ভাষা ও ব্যাকরণ নিয়ে গবেষণার নিবিড় প্রচেষ্টা; অন্যদিকে মুন্সী বসুজার দ্বৈততা — নিজেকে চাকরির খাতিরে খ্রিস্টধর্মের অনুগামী দেখানোর অভিনয়, কিন্তু অন্তরে নিজের শিকড়ে অনড় থাকা। আর এই দ্বৈরথের মাঝে হাস্যরস, ব্যঙ্গ ও নাটকীয়তায় ভরপুর হয়ে ফুটে ওঠে তৎকালীন সমাজ, সংস্কৃতি ও চিন্তার জটিলতা।

উপন্যাসে পুরনো কলকাতার, ইংরেজ পাড়ার চিত্র, স্থানীয় সমাজের ধাক্কাধাক্কি, নারী অবমাননা, সতীদাহ, ইংরেজ ও বাঙালির পারস্পরিক বিরোধ সবই গভীরভাবে চিত্রিত হয়েছে। তবে প্রমথনাথ বিশী নিছক ইতিহাসের পুনর্গঠন করেননি; বরং ইতিহাসের ভেতর ঢুকে মানুষের ছোট ছোট গল্পগুলোকে বড় করে দেখিয়েছেন। রেশমী, জন, টুশকি—এই চরিত্রগুলোর মাধ্যমে তিনি ইতিহাসের কাঠামোকে মানবিক অভিজ্ঞতায় রূপান্তর করেছেন।

কেরী সাহেবের মুন্সী তাই কেবল একটি ঐতিহাসিক উপন্যাস নয়; এটি ধর্ম, সংস্কৃতি, নারী-পুরুষ সম্পর্ক এবং উপনিবেশিক আধিপত্য নিয়ে গভীর এক অনুসন্ধান। একইসঙ্গে এটি একটি নাটকীয়, আবেগঘন ও কখনো-কখনো ব্যঙ্গাত্মক সাহিত্যকর্ম, যা পাঠককে হাসায়, কাঁদায় এবং চিন্তা করতে বাধ্য করে।