গাড়োয়াল হিমালয়ে ভারত ও লোক-মহাভারত – হিমালয় প্রেমে ইতিহাস, পুরাণ ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন

হিমালয়ের অপার সৌন্দর্য শুধুই প্রাকৃতিক নয়—তার প্রতিটি পর্বতচূড়া, গুহা, নদী ও গ্রামে লুকিয়ে আছে এক গভীর সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক এবং পুরাণপ্রসূত ঐতিহ্য। সেই আলোকেই ‘গাড়োয়াল হিমালয়ে ভারত ও লোক-মহাভারত’ বইটি হয়ে উঠেছে এক অভিনব ভ্রমণবৃত্তান্ত—যেখানে লেখক নিজস্ব অভিজ্ঞতার আলোকে খুঁজেছেন মহাভারতের ছায়া, লোকপুরাণের প্রতিধ্বনি এবং মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির আত্মিক সম্পর্ক।

গাড়োয়াল হিমালয়—শুধু তুষারে মোড়া শৃঙ্গ নয়, এই অঞ্চলই শিব-পার্বতীর আবাসভূমি, নর-নারায়ণের তপোবন এবং পাণ্ডবদের বহু কর্মস্থল। সেই গাথাই এখানে উঠে এসেছে ‘স্থল-পুরাণ’ ও ‘লোক-মহাভারত’-এর আলোচনায়।

যেখানে সাধারণত হিমালয়ভিত্তিক বইগুলো শুধুমাত্র ভ্রমণের পথে-ঘাটের কথা বলে, সেখানে এই বই হিমালয়ের আত্মা সন্ধানে নামা এক গবেষণাভিত্তিক প্রচেষ্টা। লেখক নিজের ফিল্ডওয়ার্ক ও ট্রেকিংয়ের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন এমন অনেক অখ্যাত ও অচর্চিত স্থান, যেখানে ইতিহাস আর পুরাণ একে অপরকে আচ্ছন্ন করে আছে।

পাঠক এই বইয়ে যেমন পাবেন উত্তরাখণ্ডের অজানা গ্রামগুলির গল্প, তেমনই পাবেন মহাভারতের কাহিনির সঙ্গে লোকবিশ্বাসের বিস্ময়কর সংযোগ। কে জানত পাণ্ডবদের স্মৃতিবিজড়িত এমন সব জায়গা আজও লোককথার মধ্য দিয়ে বেঁচে আছে?

‘গাড়োয়াল হিমালয়ে ভারত ও লোক-মহাভারত’ কেবল হিমালয়প্রেমীদের জন্য নয়—পুরাণ, মহাভারত, সংস্কৃতি ও সমাজ-ইতিহাসে আগ্রহী পাঠকের জন্যও এক দুর্মূল্য সংযোজন। এই বই সেইসব মানুষের কাছে এক অনন্য সেতুবন্ধন, যাঁরা প্রকৃতির বুক ছুঁয়ে খুঁজতে চান অতীতের রক্তমাখা আখ্যান ও জনস্মৃতির গন্ধ।