"দ্য স্কুল অব অ্যাথেন্স" চিত্রকর্ম – একটি অনুসন্ধানমূলক বিশ্লেষণ

রেনেসাঁ যুগের মহান ইতালীয় চিত্রশিল্পী রাফায়েল সাঞ্জিও (১৪৮৩–১৫২০) পোপ জুলিয়াস দ্বিতীয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৫০৮ থেকে ১৫১২ সালের মধ্যে রোমের ভ্যাটিকান প্রাসাদের একটি কক্ষে অঙ্কন করেন কালজয়ী চিত্রকর্ম "The School of Athens" বা "দ্য স্কুল অব অ্যাথেন্স"। এই অসামান্য শিল্পকর্মটি ইউরোপীয় মানবতাবাদী ঐতিহ্যের নিখুঁত প্রতীক, যেখানে দর্শন, গণিত, বিজ্ঞান, শিল্প ও যুক্তিবাদের মূলসূত্র স্থাপনকারী প্রাচীন গ্রীক মনীষীদের একত্রিতভাবে চিত্রিত করা হয়েছে।

এই গ্রন্থে বিশিষ্ট গবেষক ও রেনেসাঁ-চিন্তাবিদ অধ্যাপক শাক্তিধন মুখোপাধ্যায় এই চিত্রকর্মের অন্তর্নিহিত অর্থ, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এবং প্রতিটি ব্যক্তিত্বের পরিচয় ও অবদান বিশ্লেষণ করেছেন। চিত্রটিতে চিত্রিত মোট ৫৮ জন গ্রীক দার্শনিক, বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদের পরিচয় অনুসন্ধানে লেখক এক গভীর গবেষণায় নিমগ্ন হয়েছেন। তাঁদের অনেকের পরিচয় স্পষ্ট নয়, কেউ কেউ অনুমানভিত্তিকভাবে চিহ্নিত – অনেক ক্ষেত্রেই যাদের সম্পর্কে একাধিক মতামত রয়েছে। ফলে, এই বইয়ে মোট ৯৩ জন মনীষীর কথা আলোচনা করা হয়েছে, যাঁদের মধ্যে গ্রীক দার্শনিক ছাড়াও রয়েছেন রাফায়েলের সমসাময়িক কিছু রোমান চিন্তাবিদ ও শিল্পী, যাঁদের মুখাবয়ব গ্রীক মনীষীদের আদলে চিত্রিত হয়েছে।

বইটির মুখ্য বিষয়বস্তু:

• রাফায়েলের শিল্পদর্শন ও রেনেসাঁর সাংস্কৃতিক প্রভাব
• চিত্রকর্মে অন্তর্ভুক্ত গ্রীক ও রোমান মনীষীদের পরিচয়, অবদান এবং ঐতিহাসিক প্রাসঙ্গিকতা
• চিত্রকলা, দার্শনিক চর্চা ও ইতিহাসের আন্তঃসম্পর্ক
• ভারত ও গ্রীসের জ্ঞানতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক যোগসূত্র

এই বইটি কেবলমাত্র একটির ব্যতিক্রমী শিল্পকর্ম বিশ্লেষণ নয়, বরং এটি প্রাচীন জ্ঞান ও বর্তমান গবেষণার মধ্যে এক সেতুবন্ধন। এটি বাংলা ভাষায় এই বিষয়ের উপর রচিত প্রথম পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ, যা ভারতীয় পাঠকদের জন্য একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উন্মোচন করে। বইটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শহর কলকাতাকে উৎসর্গ করা হয়েছে এবং রাফায়েলের মৃত্যুর পাঁচশো বছর পূর্তি উপলক্ষে তাঁর প্রতি এক শ্রদ্ধাঞ্জলি হিসেবে রচিত হয়েছে।

কার জন্য উপযুক্ত:

ইতিহাসপ্রেমী, শিল্পানুরাগী, দর্শনচর্চাকারী, শিক্ষার্থী এবং গবেষকদের জন্য এই গ্রন্থ এক অমূল্য রত্ন।