Welcome to Dorlink
Selected Books
×
Dharshan-Brittanta Ityadi

Edited By : NA

Compiled By : NA

Translated By : NA

Publishers : Aksharbritwa Prakashan

  • Shipping Time : 7 Days
  • Policy : Return/Cancellation?

    You can return physically damaged products or wrong items delivered within 24 hours with photo/video proof.
    Contact Customer Support for return initiation and receive return authorization via email. Securely package for return.

    Refunds for eligible returns are processed within 7-10 business days via Bank Transfer.
    Order cancellation allowed within 24 hours of placing it. Standard policy not applicable for undamaged/wrong product cases. Detailed info.

  • Genre : Essays>Social/Educational/Economic Criticism
  • Publication Year : NA
  • ISBN No : NA
  • Binding : No Binding Available
  • Pages : NA
  • Weight : 200 gms
  • Height x Width x Depth : xx Inch
MRP : ₹250.00/- Discount : 10% Off
Your Price : ₹225.00/-
MRP is subject to change as per edition/impression by the publisher.
If so, it will be notified

About the Book

মনোজবাবুর জন্ম এক অজ পাড়াগাঁয়ে৷ শৈশব সেখানেই কেটেছে তাঁর৷ পাঠশালার পাঠ শুরু করার আগেই জল আর গাছে তাঁর অক্ষর পরিচয়৷ আজকাল সেই শৈশব তাঁকে বড্ড বেশি করে টানছে৷ জঙ্গলমহলের শিলাই নদীর তীরে সেই গ্রামটিতে এখন তাঁর নিজের কিছু না থাকলেও তাঁর এক আত্মীয়বন্ধুর বিশাল বাগানের মধ্যে একটি চমৎকার বাড়ি আছে৷ নাতি দুটিকে নিয়ে সেখানে যাওয়ার জন্যে বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁর মনের মধ্যে ছটফটানি শুরু হয়েছে৷ তাঁর দৃঢ় ধারণা প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হওয়া উচিত প্রকৃতির কাছে৷ আর, শুধু চোখ মেলে প্রকৃতিকে দেখলেই হয় না --- তার সাথে দৈহিক সংসর্গ করাটা একান্তই জরুরি৷ জঙ্গলে ঢুকে তার ফুল-পাতার বুনো গন্ধ বুকের ভিতরে টেনে নিতে হবে, গাছেদের কোলে উঠে বসতে হবে, নদীতে নেমে তার স্রোতের মধ্যে শরীর ভাসিয়ে দিতে হবে৷ মানুষ যে আসলে প্রকৃতিরই সন্তান --- এসব না করলে সেই বোধই জেগে উঠবে না মনে৷ ছোট্টাই-এর অন্নপ্রাশনের দিনেই তিনি স্থির করেছিলেন, মেয়ে-জামাই, ছেলে-বউমা আর দুই নাতি সহ তাঁরা স্বামী-স্ত্রী সেখানে দিন তিনেক কাটিয়ে আসবেন৷ তা, মেয়েরই আর ফুরসত হচ্ছিল না৷ বাহানা একটাই --- ছেলেকে বিদ্যাদিগ্গজ বানানোয় ব্যাঘাত৷ অবশেষে তার অ্যানুয়াল পরীক্ষা শেষ হতেই মনোজবাবু নিজেই একটা দিন ঠিক করে মেয়েকে ধমকধামক দিয়ে রাজি করালেন৷

হাওড়া থেকে এক্সপ্রেস ট্রেনে ঘণ্টা তিনেকের রাস্তা৷ তাঁরা হাওড়ার শহরতলি থেকে আর মেয়ে-জামাই দক্ষিণ শহরতলি থেকে হাওড়া স্টেশনে এসে মিলিত হবেন বিকেলে, নির্ধারিত সময়ে৷ জঙ্গল-বাগানে ঘেরা সেই বাড়িটি তাঁদের গন্তব্য স্টেশন থেকে কুড়ি কিলোমিটার দূরে৷ তিন দিনের জন্য একটি গাড়ি ভাড়া করা হয়েছে৷ সেটি তাঁদের স্টেশন থেকে নিয়ে যাবে এবং তাঁরা না ফেরা পর্যন্ত ড্রাইভার সহ তাঁর হেফাজতেই থাকবে৷ সেখানে থাকার ব্যবস্থা অতি চমৎকার৷ অবসর নেওয়ার পর থেকে মনোজবাবু প্রায় প্রতি মাসেই সেখানে দু-এক দিন কাটিয়ে আসেন৷ বাগান পরিচর্যা আর অতিথিদের দেখভাল করার জন্য তিনজন মাইনে করা কর্মচারী ছাড়া রান্নার লোকও আছে একজন৷ ছেলেমেয়েরা তাদের খুশিমতো যা পারে করবে, তিনি দুই নাতিকে নিয়ে বাগানে, জঙ্গলে খেলা করে বেড়াবেন৷ মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ চলছে৷ শিলাই নদীতে জল এখন বেশি হবে না৷ সেই অল্প জলের স্রোতেই সবাই মিলে নেমে হুটোপুটি করা যাবে৷ মনোজবাবুর মতো তাঁর দুই নাতিরও জলের প্রতি খুব টান৷ ছোট্টাইকে তো জলের গামলায় চান করাতে নামালে সেখান থেকে তুলে আনাই দায় হয়ে ওঠে৷ নদীতে নেমে কী যে মজা পাবে দুটোতে --- ভাবতে ভাবতে মনোজবাবু আক্ষরিক অর্থেই রোমাঞ্চিত হলেন৷

ট্রেন তাঁদের স্টেশনে পৌঁছোল সন্ধে আটটায়৷ সারাটা রাস্তা পিউ আর পটাই ছোট্টাইকে নিয়ে মাতামাতি করতে করতে এসেছে৷ মা-ছেলের মধ্যে রেষারেষি তার মন পাওয়ার জন্যে৷ ঠিক বোঝা গেল না কার দিকে পাল্লা ঝুঁকল, তবে তাঁদের কত্তা-গিন্নির মনে হলো পিসির দিকেই যেন টানটা বেশি৷

স্টেশন থেকে বেরিয়ে মিনিট পনেরো পরেই গাড়ি মেইন রাস্তা ছেড়ে ডানদিকে ঘুরল৷ তারপর একটি কাঠের ব্রিজ দিয়ে শিলাই নদী পার হয়ে বাঁদিকে বাঁক নিয়ে নদীটির পাশে পাশে গ্রামীণ সড়ক-যোজনার এক তন্বী কৃষ্ণার বুকের ওপর ছুটে চলল৷ দু-দিন আগেই দোল-পূর্ণিমা গেছে৷ পূর্ণচাঁদ গুটিগুটি পায়ে পুবের আকাশ বেয়ে বেশ খানিকটা ওপরে উঠে এসেছেন৷ চরাচর উদ্ভাসিত৷ রাস্তায় আর কোনো যানবাহন নেই৷ মুগ্দ চোখে বাইরের দিকে চেয়ে আছে মনোজবাবু ছাড়া আর সবাই৷ মনোজবাবুর চেনা দৃশ্য৷ তাঁর কোলে ঘুমিয়ে পড়েছে ছোট্টাই৷ পাশে পটাইও কাত৷ তিনি দুজনের শরীর ছুঁয়ে অপত্যের স্রোতে ভাসছেন৷

মিনিট দশ-বারো পরেই গাড়ি পাকা রাস্তা ছেড়ে পাতলা জঙ্গলভরা মাঠের মধ্যে নেমে পড়ল৷ অমনি একটা মদির সুবাস ঝটকা হাওয়ায় ঢুকে পড়ল গাড়ির ভিতরে৷ পিউ বলল, --- আঃ! কী দারুণ গন্ধ! কীসের গন্ধ বলো তো বাবা, খুব চেনা চেনা লাগছে৷

মনোজবাবু বললেন, --- কাজু ফুলের গন্ধ৷ এখন কাজু গাছে মুকুল আসার সময়৷

দুই ঘুমন্ত নাতি বাদে সকলেরই শরীর-মন নিমেষে চনমন করে উঠল৷ তাদের মা-ই কেবল জঙ্গলের মধ্যে একা থাকার চিন্তায় একটু মুষড়ে পড়লেন৷ তাঁর দুই ‘বীরপুরুষ’-সহ গুনতিতে যে তাঁরা আটজন সেটা তাঁকে কোনোমতে বোঝানো গেল না৷

খানাখন্দে ভরা মাঠের ওপর হেলতে দুলতে গাড়িটি গিয়ে যখন সামান্য উঁচুমত টিলার ওপর বাড়িটির সামনে দাঁড়াল তখন প্রায় ন’টা বাজে৷ দোতলা বাড়ির নীচের তলায় দুটি ঘর, তার তিনদিক ঘেরা বারান্দা; বারান্দার দু-দিকে গ্রিল দেওয়া বিশাল বিশাল জানালা৷ তৃতীয় দিকে সিঁড়ি উঠে গেছে দোতলা হয়ে তিনতলার ছাদ পর্যন্ত৷ দোতলায় একটি ঘর এবং তার সামনে ঘেরা বারান্দা, বাকিটুকু খোলা ছাদ৷ তিনটি ঘর সংলগ্ন তিনটি আধুনিক সাজসরঞ্জাম সহ বাথরুম৷ বাড়ির চারপাশে বিশাল বাগান, তার একদিক গিয়ে মিশে গেছে শালের জঙ্গলে৷