Writer : Amar Mitra
- Shipping Time : 7 Days
- Policy : Return/Cancellation?
You can return physically damaged products or wrong items delivered within 24 hours with photo/video proof.
Contact Customer Support for return initiation and receive return authorization via email. Securely package for return.
Refunds for eligible returns are processed within 7-10 business days via Bank Transfer.
Order cancellation allowed within 24 hours of placing it. Standard policy not applicable for undamaged/wrong product cases. Detailed info. - Genre : Literature>Novels & Novellas
- Publication Year : 2023
- ISBN No : 978-81-960799-0-1
- Binding : Card Board (Hard) with Gel Jacket
- Pages : 336
- Weight : 515 gms
- Height x Width x Depth : 8.5x5.5x0.5 Inch
If so, it will be notified
About the Book
অমর মিত্রের র্যাডক্লিফ লাইন উপন্যাস দেশভাগের গল্প নয় কেবল; এটি একটি দীর্ঘশ্বাস-ভরা ইতিহাসের গীতিনাট্য, যেখানে মানচিত্র শুধু ভূগোল নয়—মনের রেখাও কেটে দেয়। ইতিহাস এখানে রেফ্রিজারেটরে রাখা ঠান্ডা দেহ নয়, বরং গান, স্মৃতি আর প্রতিকারের আর্তিতে জেগে ওঠা এক জীবন্ত সত্তা।
গল্পের সূচনা হয় এক বিস্ময়কর দৃশ্য দিয়ে—মুসলিম লিগের প্রাদেশিক সভায়, যেখানে বাংলার গরিব চাষারা আব্বাস উদ্দীনের গান শুনতে এসেছে, রাজনৈতিক বক্তৃতা নয়। গান নিষিদ্ধ করেন মোহাম্মদ আলি জিন্না, কারণ গান ‘অনৈতিহাসিক’, অতিরিক্ত আবেগঘন। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে এক বিপুল জনতা গর্জে ওঠে—“গান আগে চাই!” এই দৃশ্য হয়ে ওঠে গান বনাম আদর্শের প্রথম সংঘাত, যা ভবিষ্যতের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং জাতিগত সত্তার সংগ্রামের পূর্ব-স্মৃতি হয়ে ওঠে।
এরপরে উপন্যাস গড়িয়ে যায় এক পুরনো বাড়ির দিকে—আঁখি মঞ্জিল। এই বাড়ি হয়ে ওঠে পূর্ব ও পশ্চিম বাংলার স্মৃতির এক প্রতীক, যেখানে হিন্দু-মুসলমান পরিবার নিজেদের জমি অদলবদল করলেও, একে অপরের কান্না, গন্ধ, সুর কিংবা ইতিহাস বিনিময় করতে পারেনি। পুকুরে ডুবে যাওয়া মেয়ের কান্না থেকে শুরু করে “গাড়িয়াল ভাই”-এর প্রতিধ্বনি, সবকিছু জমির সঙ্গে থেকে যায়, বদলায় না।
উপন্যাসের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত আসে যখন আঁখি মঞ্জিল ভেঙে পড়ে—‘নিরামিষ আবাসনের’ নির্মাণের ভার সইতে না পেরে। এটি কেবল এক বাড়ির পতন নয়, বরং এক যুগের ভাঙন, যেখানে বনবিবি হয়ে যান বনদেবী, কারণ ‘মুসলমানদের প্রবেশ নিষেধ’। ভাঙনের এই প্রক্রিয়াই মূল ‘মাস্টারপ্ল্যান’—সংখ্যালঘুদের ধীরে ধীরে মুছে ফেলার এক ঠান্ডা কৌশল।
চরিত্রগুলো বাস্তব আর প্রতীকের সীমান্তে দণ্ডায়মান। বিমল চন্দ্র—এক প্রাক্তন সহ-সম্পাদক, যিনি জানেন, ইতিহাস কিভাবে ভুয়া রিভিউ দিয়ে বিকৃত হয়। শহরের নবীন প্রোমোটার-কেন্দ্রিক আধুনিকতা, রাজনৈতিক সুবিধাবাদ, আর সাহিত্যিক ভণ্ডামির বিরুদ্ধে তার নীরব বিদ্রোহ দাঁড়িয়ে থাকে এক ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডির মতো। অন্যদিকে আছে রব, এক মুসলিম লিগপন্থী প্রেতাত্মা; আর আঁখি, সম্পত্তির লোভে খুন হওয়া এক কিশোরী, যিনি ছায়ার মতো ফিরে আসেন, যেন মৃতরাও সাক্ষ্য দিয়ে যায় উপমহাদেশের হিংস্র ক্ষমতার খেলা সম্পর্কে।
সমসাময়িক ঘটনাবলি, যেমন কোভিডকালে ‘করোনাদেবী’র উপাসনা কিংবা এনআরআই সুচরিতার বাড়িতে বনবিবির রূপে কাজ করা মুসলিম পরিচারিকা, উপন্যাসকে এনে ফেলে রাজনৈতিক বাস্তবতার গভীরে। “রিভার ভিউ” টাওয়ারের হঠাৎ ধ্বংস—প্রতীকের মতোই—এই নগরায়নের অন্তঃসারশূন্যতা ও আত্মবিচ্ছিন্নতাকে প্রতিফলিত করে।
প্রায় এক শতাব্দীর ঘটনাপ্রবাহকে অমর মিত্র এমনভাবে বিন্যস্ত করেছেন, যেখানে ইতিহাস আর কুহক একে অপরকে ছায়া দেয়। প্রতিটি চরিত্র যেন একেকটি রাষ্ট্র—কখনও নির্যাতিত, কখনও অত্যাচারী, আবার কখনও নিঃসঙ্গ ইতিহাসের বাহক। দেশভাগ নয়, এখানে উঠে আসে “মানুষভাগ”—ভূগোলের সঙ্গে আত্মার ছেঁড়াছেঁড়ি।
এই উপন্যাস এক দীর্ঘ সময়ের, বহু কণ্ঠের সম্মিলিত গান, যেখানে প্রতিটি স্তব্ধতা একেকটি চিৎকার হয়ে দাঁড়ায়।